ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পরোয়ানাভুক্ত আসামি ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২১
পরোয়ানাভুক্ত আসামি ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী ...

চট্টগ্রাম: সন্দ্বীপের ১৫ নম্বর মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত-২ (৪, ৫ ও ৬) সদস্য পদে বই প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণা মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি শামীম আক্তার স্বপ্না (৪৩)।

নগরের ইপিজেড থানার এ মামলায় গ্রেফতারি পরেোয়ানা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে এ প্রার্থী গণসংযোগ চালাচ্ছেন।

এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে ভোটারদের মধ্যে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, শামীম আক্তার স্বপ্না সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে রাকিবুল আলম প্রকাশ নাসির উদ্দীনের সঙ্গে পরিচিত হন।

২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা নিয়ে রাকিবুলকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি স্বপ্না।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করলে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে ফেরৎ দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি আপোষনামা করেন স্বপ্না। কিন্তু টাকা ফেরৎ না দিয়ে ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি উল্টো উকিল নোটিশ পাঠান এবং ২৬ জানুয়ারি টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করেন।  

এ অবস্থায় রাকিবুল আলম প্রকাশ নাসির উদ্দীন ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ইপিজেড থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর: ২৪/২০২০। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ নভেম্বর স্বপ্নার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরেোয়ানা জারি করেন।

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে বলা হয়েছে, প্রার্থী যদি কোনও আদালত কর্তৃক পরোয়ানাভুক্ত আসামি হন, তাহলে তিনি প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।  
মামলার বাদির অভিযোগ, শামীম আক্তার স্বপ্না ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। নির্বাচন কমিশন ও উপজেলা প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৌরভ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, শামীম আক্তার স্বপ্নার নামে তৎকালীন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত  ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর পরোয়ানা জারি করেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সন্দ্বীপ উপজেলার ১৫ নম্বর মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত-২ ওয়ার্ডে এই আসামি সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। যা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) ২০০৯ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।  
 
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখাল চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও যাচাই-বাছাইয়ের সময় মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের সংরক্ষিত-২ সদস্য পদে প্রার্থী শামীম আক্তার স্বপ্নার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে কোনো তথ্য পাঠায়নি সন্দ্বীপ থানা পুলিশ। ফলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বশির আহম্মেদ খান বাংলানিউজকে জানান, ‘বিষয়টি আমার নজরে নেই৷ ওয়ারেন্ট অফিসারের সঙ্গে কথা বলে এই ব্যাপারে জানা যাবে’।

ওয়ারেন্ট অফিসার নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন শামীম আক্তার স্বপ্না। গত মঙলবার রাতেও তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেছি। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘থানায় দায়েরকৃত মামলায় পরোয়ানা থাকার পরও পুলিশ কেন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, সেটা বোধগম্য নয়। তবে কোনো মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও পরোয়ানাভুক্ত আসামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না’।  

প্রসঙ্গত, ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২১
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।