ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবিতে ৪ ছাত্রীর মারামারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি, নোলককে শোকজ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
চবিতে ৪ ছাত্রীর মারামারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি, নোলককে শোকজ ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: কথা কাটাকাটির জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পদধারী ৪ ছাত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বেগম খালেদা জিয়া হল কর্তৃপক্ষ।  

শুক্রবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সোহেল।

তদন্ত কমিটিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের সিনিয়র শিক্ষক ড. শাহ আলমকে আহ্বায়ক, হলের আবাসিক শিক্ষক উম্মে হাবিবাকে সদস্যসচিব ও সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবির ও হাসান মুহাম্মদ রোমানকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে৷ 

এ ছাড়া আবাসিক হলে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে তাসফিয়া জাসরাত নোলককে কারণ দর্শানের নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে তাকে।  

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, গতরাতে হলের ২০৩ নম্বর রুমের মারামারির ঘটনায় দুইজন দুইজনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত তাসফিয়া নোলকের বিরুদ্ধে আগেও প্রক্টর অফিস থেকে অভিযোগ এসেছিলো। পাশাপাশি হলের সিনিয়রদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, হলের পড়াশোনা পরিবেশ নষ্ট করাসহ অনেক লিখিত অভিযোগ আমরা তাঁর বিরুদ্ধে পেয়েছি। সবধরনের অনিয়মের অভিযোগে আমরা তাকে শোকজ করেছি। আর ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জায়গা। এখানে কেউ পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করলে আমরা সে বিষয়ে সবসময় কঠোর।  তাই এ ঘটনাতেও অভিযোগ প্রমাণ হলে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নেবো।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে বেগম খালেদাজিয়া হলের ২০৩ নম্বর রুমে ৪ ছাত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন, ছাত্রলীগের উপ স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সংস্কৃত বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সিমা আরা শিমু এবং উপ ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সাজমুন নাহার ইষ্টি।  

অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তাসফিয়া জাসারাত নোলক ও নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের উপ কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক নির্জনা ইসলাম ।  

হলের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে অভিযুক্ত তাসফিয়া জাসারাত নোলকের বিরুদ্ধে মাদকসেবন ও মাদকদ্রব্য বহনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গভীর রাতে হলের বাইরে থাকায় বেশকিছু দিন আগে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা টহল দেওয়ার সময় তাকে আটক করেন। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে মাদক কারবারের সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে তাদের কাছে। তাই দীর্ঘদিন নজরদারিতে রয়েছেন তিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশ থেকে কয়েক সপ্তাহ আগে গভীর রাতে টহল দেওয়ার সময় একটি ছেলের সঙ্গে তাসফিয়া নোলককে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা হাতেনাতে ধরেন।  

জানা গেছে, তাসফিয়া জাসরাত নোলক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ বিজয় গ্রুপের অবাঞ্ছিত নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াসের অনুসারী। সম্প্রতি চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মাদক সরবরাহের অভিযোগ তুলে আজীবন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। পাশাপাশি তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

তাসফিয়া জাসারাত নোলক বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগটি মিথ্যা। কিছুদিন আগে আমি শহর থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় অনেক রাত হয়ে যায়। সেসময় প্রক্টরিয়াল বডি আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে আমার কাছ থেকে বেশি রাতে বাইরে না থাকার বিষয়ে মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। এছাড়া গতরাতে ঐ আপুরা প্রথমে আমাকে স্টিলের স্কেল দিয়ে আঘাত করেছিলো। আমি রাতে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আজকে সারাদিন কারও ফোন ধরতে পারিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
এমএ/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।