ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

২০১৯ থেকে তরুণদের সহিংসতার প্রবণতা বেড়েছে

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
২০১৯ থেকে তরুণদের সহিংসতার প্রবণতা বেড়েছে ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির (বিপিও) তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে তরুণদের সহিংসতার প্রবণতা বেড়েছে। ২০১৯ সালে ২ হাজার ৪১১টি যুব সহিংস ঘটনা, ২০২০ সালে ২ হাজার ৩৬৩টি এবং ২০২১ সালে তা কিছুটা কমে ১ হাজার ৮৯৬টি সহিংস ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনাগুলো ২০১২-১৮ সাল পর্যন্ত কখনো কমেছে আবার কখনো বেড়েছে। তবে কখনোই দেড় হাজারের বেশি হয়নি।
কিন্তু ২০১৯ সালে হঠাৎ সহিংসতার মাত্রা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) তরুণ কলাম লেখক ফোরামের আয়োজনে ‘অপরাধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: প্রেক্ষিত তরুণ প্রজন্ম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে চবি ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সাইন্স বিভাগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন এসব তথ্য দেন।

বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় চবির সামাজবিজ্ঞান অনুষদের একটি শ্রেণিকক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।  
 
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারের প্রধান আলোচক ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ।

অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, আমাদের সামাজিক সমস্যাগুলো গবেষণা করে অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে। কারণ সমাজ হলো বিভিন্ন বৈচিত্র্যের সম্ভার। সব বৈচিত্র্যকে সঙ্গে নিয়ে কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গড়তে তরুণদের আরও বেশি কাজ করা প্রয়োজন। আধুনিক সমাজ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে হবে।  

মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ তরুণ আছে। যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ। বর্তমান বিশ্বে তরুণদের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া বৈশ্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এ তরুণ প্রজন্মই আগামীর বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে।

তিনি বলেন, গত তিন বছরে দেশে অন্তত ৩ হাজার ৯২২ কিশোর-কিশোরীকে হিংসাত্মক ও অপরাধমূলক কর্মকােণ্ডের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন বাধ্যতামূলক বন্ধ থাকায় তরুণদের মধ্যে নানাবিধ কারণে অপরাধের প্রবণতা দেখা গেছে। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তরুণদের সম্পৃক্ততা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ২০২১ সালে তরুণদের সংশ্লিষ্ট সহিংসতার বেশিরভাগই ছিল লাঞ্ছনা। যা ৫৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং যৌন নিপীড়নের ঘটনা ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ।

তরুণ প্রজন্মের অপরাধ প্রবণতার একটি হচ্ছে ব্যক্তিগত ইস্যু এবং অন্যটি হলো সমসাময়িক পরিস্থিতি। ব্যক্তিগত ইস্যুর মধ্যে রয়েছে- অনিরাপত্তায় ভোগা, ভয়, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, শত্রুতা, অবজ্ঞা, আবেগপ্রবণতা ও বশ্যতা। এসব কারণে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই অপরাধে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে।  

তরুণ প্রজন্মকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে আগের মতো সচল করতে হবে। তাহলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অনাচার, নৈরাজ্য কমে আসবে। বিভিন্ন গবেষণায় আমরা দেখেছি, সামাজিক অপরাধের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো অচল হয়ে পড়া।

সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসেবে ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম, চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোরশেদুল আলম।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।