ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতার ১০ম বাংলাদেশ বইমেলায় পালিত হলো ‘মৈত্রী দিবস’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২২
কলকাতার ১০ম বাংলাদেশ বইমেলায় পালিত হলো ‘মৈত্রী দিবস’

কলকাতা: কলকাতার কলেজস্ট্রীটের কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে চলছে ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ছিল পঞ্চমতম দিন।

দিনটি ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত, প্রথম বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল। সেই দিনটিকে স্মরণ করে কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলার ৫ম দিনটিকে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবসকে উৎসর্গ করা হয়েছে।

এদিন বাংলাদেশ বইমেলার মঞ্চে ‘৫১ পেরিয়ে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান জাদুঘরের কিউরেটার ও সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, পশ্চিমবঙ্গের কথা সাহিত্যিক অমর মিত্র, কবি ও সাহিত্যি রামচন্দ্র দাস, সাংবাদিক অমল সরকার, অধ্যাপক আরিস এঙ্গেলসন রুড, বিশিষ্ট সমাজসেবী অধ্যাপক ইমানুল হক-সহ বিশিষ্টরা।

আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারত যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে ৬ ডিসেম্বর দুই দেশে মৈত্রী দিবস পালন হবে। এরইমধ্যে কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা যেনো এক মৈত্রীর সেতু তৈরি করেছে। দিনটি উপলক্ষে বইমেলায় মৈত্রী দিবস পালন করার ঘোষণা দেন তিনি।

অধ্যাপক ইমানুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে শেখ হাসিনা কিভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। লোকে বলে বাঙালি পারে না। আমি বলব বাঙালিই পারে। বাংলেদেশের জিডিপি চীনের থেকে বেশি, ৮ দশমিক ১ শতাংশ। ব্রিটিশরা আসার আগে বাংলার জিডিপি সবচেয়ে বেশি ছিল বাংলার। অর্থাৎ বাংলাই পারে।

গত শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) ১০ম বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজরুল ইসলাম, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনা আন্দালিব ইলিয়াস-সহ বিশিষ্টরা।

বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি ঢাকার সম্মিলিত উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে কলকাতার বইপাড়া বলে পরিচিত কলেজ স্ট্রিটের কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে। স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা অবধি ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।  

প্রতিবারের মতো এ বছরও বাংলাদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা, প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৬৮টি স্টলে, ৭৫টি বাংলাদেশি প্রকাশনার বই কলকাতার পাঠকদের কাছে হাজির করা হয়েছে। এবারে বাংলাদেশ বইমেলা কলকাতার বই পাড়ায় হওয়ায় পাঠকদের মধ্যে চাহিদা ও আগ্রহ বেড়েছে বিগত বারের থেকে বেশি।

প্রতিটি বইয়ের স্টলে বিপুল বাংলাদেশি বইয়ের সম্ভারের পাশাপাশি কলকাতার বইপ্রেমীদের জন্য প্রতিদিন থাকছে একমঞ্চে দুই বাংলার প্রতিথযশা শিল্পীরা। অংশ নিচ্ছেন কলকায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। বইমেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করছে কলকাতার ভাষা ও চেতনা সমিতি।

আয়োজকদের মতে, কলকাতার বইপাড়া এমন একটা অঞ্চল যেখানে নিত্যদিন ভিড় লেগে থাকে। একদিকে যেমন গোটা বাংলার পাইকারি ও খুচরা বইয়ের বাজার এই কলেজ স্ট্রিট, অপরদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কলেজ স্ট্রিটে। এছাড়া বাড়তি পাওনা কফি হাউসের আড্ডাপ্রেমীদের জমায়েত। ফলে কলেজ স্ট্রিট মানে বাংলাদেশ বইমেলার বাড়তি প্রচার। সেটাই আসল উদ্দেশ্য।

একসময় বাংলায়, বাংলাদেশি বইয়ে প্রাপ্তিস্থান ছিল কলকাতা বইমেলায়। পরবর্তীতে পাঠক সমাবেশ ও পত্রভারতীর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশি বইয়ের স্থায়ী ঠিকানা হয় কলকাতার কলেজস্ট্রীটে। তারই মাঝামাঝি বাংলাদেশি বইয়ের পসরা নিয়ে ২০১১ সালে কলকাতায় পথচলা শুরু ‘বাংলাদেশ বইমেলা’। শুরু থেকে ৩ বছর গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালায় বইমেলাটি হয়। তবে শুরু হলেও নির্দিষ্টস্থানে মেলাটিকে ধরে রাখা যায়নি। পরবর্তীতে ৪ বছর মেলা হয় রবীন্দ্রসদনের খোলা প্রাঙ্গণে। এরপর রবীন্দ্রসদন চত্বর ঘুরে ৩ বছর বাংলাদেশ বইমেলা হয়ে আসছিল রবীন্দ্রসদনের পশ্চিম পাশে মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। ২০১৯ সালে, শেষবার সেখানেই হয়েছিল। মাঝে করোনার জন্য দু’বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছর ফের স্থান পরিবর্তন করে চলে এলো কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে। অয়োজকদের অভিতম, কলেজ স্ট্রীটের, কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণ-ই হবে বাংলাদেশ বইমেলার স্থায়ী ঠিকানা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২২
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।