ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মোদি সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে ২৯ এবং ৩০ মার্চ ধরনা দেবেন মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
মোদি সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে ২৯ এবং ৩০ মার্চ ধরনা দেবেন মমতা সাংবাদিকদের মুখোমুখি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: আগামী ২৯ এবং ৩০ মার্চ দিল্লিতে ধরনায় বসতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) তিন দিনের উড়িষ্যা সফরে রওনা হওয়ার আগে একথা জানান খোদ মমতাই।

 

বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা এবং একনায়ক মনোভাবের বিরুদ্ধে ধরনায় বসতে চলেছেন তিনি। আগামী ২৯ মার্চ দুপুর ১২টায় নয়াদিল্লির আম্বেদকারের মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসবেন। টানা দু’দিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ পর্যন্ত‌ চলবে সেই ধরনা।

তিনি বলেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র সরকার। আবাস যোজনার টাকা দেয়নি। সড়ক নির্মাণের টাকাও দেওয়া হয়নি। ১২ হাজার গ্রামীণ সড়ক তৈরি করছি রাজ্যের টাকাতে। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া কেন্দ্রীয় বাজেটেও বাংলা কিছু পায়নি। কেন বাংলা কিছুই পাবে না? আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমার শংসাপত্র পেয়েছি। অথচ তারপরও আমাদের বঞ্চনার শিকার হতে হবে!

ছ’মাস আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন পশ্চিমবঙ্গে বৈঠক করতে এসেছিলেন তখন তাঁকেও বলা হয়েছিল। একাধিক চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনা জারি রয়েছে। সব প্রকল্প মিলিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে পশ্চিমবঙ্গের পাওনার পরিমাণ এখন প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপি বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই বঞ্চনা করার প্রতিবাদ, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষপাতিত্ব এবং একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমি ধরনায় বসতে চলেছি। ২৯ মার্চ দুপুর ১২টায় আম্বেদকার মূর্তির সামনে আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ধরনায় বসব। ৩০ তারিখও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে ধরনা। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে। পাশাপাশি এদিন সিবিআই, ইডি-র অতিসক্রিয়তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতার কথায়, কেবল বিজেপির কথায় একটা করে টিম পাঠিয়ে দিচ্ছে। সিবিআই, ইডি পাঠিয়ে দিচ্ছে। যেন সিবিআই ওদের প্রেসিডেন্ট। ইডিও বিজেপির প্রেসিডেন্ট। কেবল আইওয়াশ করতে কেন্দ্রীয় টিম পাঠাচ্ছে। বিজেপির লোকেরা সান্ত্বনা পাচ্ছে। কিন্তু, মনে রাখবেন সরকার আলাদা এবং দল আলাদা।

প্রথম থেকেই মোদি সরকারের নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস। রান্নার গ্য়াসের দাম বৃদ্ধি থেকে কেন্দ্রীয় আর্থিক বকেয়া মেটানোর দাবিতে এর আগেও পথে নামতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। এমনকী ২০১৯ সালে সারদা ঘুষ কাণ্ডে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের সন্ধানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল যখন কলকাতায় হানা দিয়েছিল তখনও তার গ্রেফতার ঠেকাতে এসপ্ল্যানেডে ধরনা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে এবার সেই ধরনা হবে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনা-লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে। ফের একবার মমতা পুরনো বিরোধী নেত্রীর সত্ত্বায় নিজেকে তুলে ধরতে চলেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যা সামগ্রিকভাবে আসন্ন ২৪এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী জোট ও দলগুলির কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

এছাড় চলতি বছরের রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হবে। তার আগে দুর্নীতির কাঁটায় জেরবার মমতার দল। দলের যুব নেতা থেকে অনুব্রত মণ্ডলের মত দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা-মন্ত্রীরা জেলে। চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। প্রতিনিয় দুর্নীতির নতুন তথ্য উছে আসছে মমতার সরকারের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে মরিয়া মমতাও। হয়তো তাই ফিরে গেলেন সেই পুরনো কায়দার আন্দোলনে। যা বাংলার রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।