ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে বিস্ফোরণে নিহত ৯, মমতার দাবি অবৈধ বাজি কারখানা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
পশ্চিমবঙ্গে বিস্ফোরণে নিহত ৯, মমতার দাবি অবৈধ বাজি কারখানা

কলকাতা: ভরদুপুরে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে এগরা এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত অন্তত ৭ জন। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাদের।

 

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, অবৈধ বাজি কারখানার কারণে এই ঘটনা। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।  

তিনি বলেন, আমিতো শুনেছি যে ব্যক্তি এ কাজ করেছে সে উড়িষ্যায় পলাতক। আমার কাছে খবর আছে, সে নাকি বাংলাদেশ ও উড়িষ্যায় আতশবাজি সাপ্লাই করত। আমি সেখানকার সরকারদের বলব, তারা যেন সজাগ থাকে।

নিহতদের পরিবারপ্রতি ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি এবং গুরুতর আহতদের পরিবারপ্রতি এক লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে এই ঘটনার তদন্তভার রাজ্যের সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের পর ওই জেলার এগরা। মঙ্গলবার দুপুরে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রাম। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ৯ জন নিহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে গ্রামে পুলিশ ঢোকার চেষ্টা করতেই তাদের ঘিরে ধরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের পর রাস্তায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে থাকে মরদেহ। জখম হয়েছে অনেকে। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, অবৈধ আতশবাজি কারখানা থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই অঞ্চল একবারে উড়িষ্যা বর্ডারে। এবং যে ভদ্রলোক এই সেখানে বেআইনিভাবে বাজি কারখানা চালাচ্ছিল। তাকে আমাদের পুলিশ গতবছর অক্টোবরে গ্রেপ্তার করেছিল। আদালত থেকে সে জামিন পেয়ে আবার এই অবৈধ বাজি নির্মাণের কাজ শুরু করছিল। স্থানীয়রা সেখানে কাজ করত। জীবিকার বিষয় একটা ছিল।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এগরায় আতশবাজি তৈরির আড়ালে বোমা তৈরি হতো। সেখান থেকেই এই বিস্ফোরণ। অবৈধভাবে বোমা প্রস্তুত হচ্ছিল কৃষ্ণপদ বাগের কারখানায়। বাজি তৈরির বিপুল মশলা মজুত থাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। যেহেতু সামনেই পঞ্চায়েত ভোট সেই কারণে প্রশ্ন উঠেছে, এটি অবৈধ বাজি তৈরির কারখানা, নাকি বৈধ কারখানা, নাকি বাজি কারখানার আড়ালেই চলছিল বোমা বাঁধার কাজ, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ইতোমধ্যেই এই বিস্ফোরণের ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ-এর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আসুক না। আমার কোনো আপত্তি নেই। এর সঙ্গে আমাদের সরকারও জড়িত নয়, আমাদের দলও জড়িত নয়।

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জামাতুল মুজাহিদিন গোষ্ঠীর জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সে সময় মমতার সরকারের পক্ষে প্রথমে দাবি করা হয়েছিল গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনা। পরে অবশ্য স্বীকার করেছিল অবৈধ কার্যকলাপ। পরে এনআইএ তদন্তে জানা যায়, বাংলাদেশে অঘটন ঘটানোর জন্য খাগড়াগড়ে বোমা তৈরি হচ্ছিল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, ১৬ মে, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।