কলকাতা: যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক পাওয়ার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করল কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দিনটি উপলক্ষে মিশন প্রাঙ্গণের বাংলাদেশ গ্যালারিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
দিনের শুরুতে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে কাউন্সিলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম ও কাউন্সিলর (কনস্যুলার) এএসএম আলমাস হোসেন।
উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু শান্তিপূর্ণভাবে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা আজীবন লড়াই করে গেছেন।
এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক পাওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন রাজনৈতিক কাউন্সিলর তুষিতা চাকমা ও দূতাবাস প্রধান সিকদার মোহাম্মদ আশরাফুর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন বিশ্ব শান্তির জন্য স্বপ্ন দেখেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নে ব্রতী হয়ে সব ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশে রূপান্তরিত করেছেন, যা বিশ্বে দেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপ-হাইকমিশনের সব কর্মচারীকে শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে ম্যারি কুরি ও পিয়েরে কুরি বিজ্ঞানী দম্পতির মহান অবদান চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করে আসছে।
১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন এবং বিশ্ব শান্তির সপক্ষে বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জুলিও কুরি শান্তি পদক দেওয়ার জন্য শান্তি পরিষদের মহাসচিব রমেশ চন্দ্র প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পৃথিবীর ১৪০টি দেশের শান্তি পরিষদের ২০০ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি শান্তি পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৯৭৩ সালের ২৩ মে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের উত্তর প্লাজায় উন্মুক্ত চত্বরে সুসজ্জিত প্যান্ডেলে বিশ্ব শান্তি পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের বিশাল সমাবেশে বিশ্ব শান্তি পরিষদের তৎকালীন মহাসচিব রমেশ চন্দ্র বঙ্গবন্ধুকে এ পদক দেন। এরপর তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, আজ থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে। ’
বঙ্গবন্ধু ছাড়া যারা এই শান্তি পদক লাভ করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, নিওনিদ ব্রেজনেভ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন উপ-হাইকমিশনের দ্বিতীয় রাজনৈতিক সচিব শেখ মারেফাত তারিকুল ইসলাম। সর্বশেষে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
ভিএস/এসআইএ