ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সিঙ্গুরের টাটা গুজরাটে আছে সানন্দে

মান্নান মারুফ ও ইশতিয়াক হুসাইন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৪
সিঙ্গুরের টাটা গুজরাটে আছে সানন্দে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম

সানন্দ (গুজরাট), ভারত থেকে: পশ্চিবঙ্গের সিঙ্গুরে এক খণ্ড জমি পেতে কি গলদঘর্মই না হয়েছিল টাটা মটরস। এক লাখ রুপি মূল্যের টাটা ন্যানো গাড়ি তৈরির জন্যই ওই জায়গা চেয়েছিল টাটা।

এজন্য তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয় ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সেই আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত টাটাই নিজ থেকে সরে যায়।

জমির জন্য হন্যে ঘুরতে থাকে টাটা। গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লুফে নেন এই সুযোগ। গুজরাটের রাজধানী গান্ধীনগর থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরে সানন্দ উপজেলার খোদা ও বোল গ্রামে টাটাকে দিয়ে দেন ১১০০ একর জমি। এর মধ্যে টাটা ন্যানো কারখানার জন্য দেন ৭২৫ একর জমি। পাশেই টাটা ভেন্ডর পার্কের জন্য দেন ৩৭৫ একর জমি।  
Tata_1_
শুধু জায়গা দেওয়াই নয়, মূল মহাসড়ক থেকে কয়েক কিলোমিটার ভেতরের দুই গ্রামে যেতে শিল্পবান্ধব নরেন্দ্র মোদী পাকা সড়ক নির্মাণ করে দেন। সরেজমিনে সানন্দে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়ক থেকে টাটা কারখানায় যেতে এ পাশে দুই লেন, ওপাশে দুই লেন করে চার লেনের সড়ক। বিশাল এই সড়ক দিয়ে টাটার বড় বড় সব ট্রাক মালামাল নিয়ে কারখানায় যাচেছ।   

টাটা ন্যানো কারখানার মূল গেটের বাইরে বিশাল খোলা জায়গায় বেশকিছু তরুণ জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। পাশের ব্রক্ষ্মা গ্রামের যুবক বরুণের সঙ্গে কথা হয়। বরুণ ডিগ্রির শিক্ষার্থী। প্রতিদিন বিকেলেই বন্ধুদের নিয়ে এখানে ঘুরতে আসেন। খোলামেলা জায়গা হওয়ায় খুব ভালো লাগে। তাই আসা হয়।  
Tata_2
টাটাকে জমি দেওয়া ছাড়াও সানন্দ এলাকার ৬টি গ্রামের জমি অধিগ্রহণ করে এখানে আরো বহু দেশি-বিদেশি কোম্পানিকে জায়গা দেয় গুজরাট সরকার। খোদা, হরিপুর, গোকালপুর, চারাল, সিয়াওদা ও বোল গ্রামের জমি নিয়ে গড়ে তোলা নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া। এই এরিয়ার সবকিছু দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় গুজরাট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনকে (জিআইডিসি)।

টাটাকে জমি দিতে জায়গা অধিগ্রহণের সময় এলাকার কয়েক হাজার কৃষক বিক্ষোভও করেন। কিন্তু প্রচলিত বাজার দরের চেয়ে তিনগুণ বেশি দাম দিলে কৃষকরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেন।   টাটা প্রতি একর জমির জন্য ৮১ হাজার ডলার দাম পরিশোধ করে গুজরাট সরকারকে।  
Tata_3
জায়গা পেয়ে ২০০৮ সালেই ১৪ মাসের মধ্যে সানন্দে ন্যানোর কারখানা তৈরি করে টাটা। এতে ব্যয় হয় ২০ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি। আধুনিক রোবোটিকস ও উচ্চগতি সম্পন্ন প্রডাকশন লাইন তৈরি করে। প্রথমেই বছরে আড়াই লাখ গাড়ি তৈরির সক্ষমতা দিয়ে যাত্রা শুরু করে কারখানাটি। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে এর উৎপাদন সক্ষমতা হবে ৫ লাখ। শুরুতে ২৪০০ লোকের কর্মসংস্থান হয় সানন্দে। পরোক্ষভাবে এতে চাকরি মেলে আরো ১০ হাজার লোকের। এছাড়া কারখানা, ভেন্ডর পার্ক, পণ্য ট্রেনে আনা নেওয়াসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে চাকরি হয় আরো ২০ হাজার লোকের।
Tata_4
পাশের চারোডি গ্রামের তিন যুবক মো: খান, সেলিম ও আবদুল রহমানের সঙ্গে আমাদের কথা হয় একটি চায়ের দোকানে। তারা বলেন, এখানে টাটার কারখানা হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের মতো আশপাশের গ্রামের মানুষের চাকরি হয়নি এই কারখানায়।
      
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৪

** নর্মদার পানিতে স্বচ্ছ সবরমতি, মেঘনার পানিতে বুড়িগঙ্গা কবে?
** মোদীর হাতে ‘সবরমতি’র নতুন প্রাণ
** মোদীর গুজরাট উন্নয়নের আইকন ‘গিফটসিটি’
** চকচকে পরিপাটি ‘গান্ধীনগর’
** আহমেদাবাদ থেকে বাংলাদেশ যাচ্ছে ব্লাড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
** ঘুরে আসি আজমীর
** দিল্লি প্রেসক্লাবে সাবসিডি নেই!
** দিল্লির রাতে সস্তা দোকানিরা...

** মাকরানার হোয়াইট মার্বেলেই অনিন্দ্য তাজমহল

** দিল্লির আশীর্বাদ দিল্লি মেট্রো,ঢাকা মেট্রো কবে

** অ্যারাভেলি পর্বতে ঘেরা ভ্রাতৃত্ব

** ৩৬ ঘণ্টার বিচিত্র রূপ!

** ইন্টারনেটে বাংলাদেশ এগিয়ে

** সেই তো আমরাই!
** লাইফলাইন অব ইন্ডিয়া
** দিল্লি কত দূর?
** ভারতীয় ইমিগ্রেশনে বাংলাদেশের মর্যাদা
** গ্রীনলাইনে ভুগতে ভুগতে কলকাতা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।