ভাদোদারা (গুজরাট), ভারত থেকে: ভারতের শিল্পকলকারখানার কেন্দ্র বিন্দু এখন পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য গুজরাট। বিদেশি নামিদামি কোম্পানি ছাড়াও সেদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান প্রধান কারখানা গড়ে উঠেছে এখানে।
বিশ্বের অন্যতম বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান টাটা ন্যানো, জেনারেল মটরস, রিলায়েন্স, হুন্দাই, ফোনিক্স এর কারখানা এখানে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার, বড় শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড, ভারতের একমাত্র কেমিক্যাল পোর্ট টার্মিনাল, একাধিক প্রাকৃতিক গ্যাস টার্মিনাল রয়েছে গুজরাটে। কৃষিখাতেও এ রাজ্যের অগ্রগতি ইর্ষণীয়।
জেনারেল মটরসের কারখানা দক্ষিণের ভাদোদারার হালোলে, ভুজে রয়েছে টাটার ট্রাক তৈরির কারখানা, দক্ষিণের জেলা সুরাত পরিণত হয়েছে বিশ্বের ডায়মন্ড ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে। বিশ্বের ৯২ শতাংশ ডায়মন্ড কাটা ও পলিশ করা হয় সুরাতে। দক্ষিণের আরেক জেলা ভারুচ প্রেট্রোলিয়াম, কেমিকেল ও পেট্রোকেমিকেলের বিনিয়োগ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। ৪ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে ছড়িয়ে রয়েছে এসব কেমিকেলের কারখানা।
এতসব শিল্পকারখানার মালিক কেন এই রাজ্যে আসছে। এর পেছনের কারণ কি? গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিল্পবান্ধব পরিচিতি নতুন নয়। সঠিক পরিবেশ তৈরি করে শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যাপক উদ্যোগ নেন তিনি। তবে এই উদ্যোগের চেয়ে তার সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল এসব বিনিয়োগের আকর্ষণের পূর্বশর্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির নিশ্চয়তা তৈরিতে। এক্ষেত্রে শতভাগের বেশি সাফল্য দেখিয়েই তিনি বিনিয়োগকারীদের তার রাজ্যে আসতে উৎসাহিত করেছেন।
ন্যানো গাড়ির কারখানা তৈরির জন্য পশ্চিমবঙ্গে এক টুকরা জমির জন্য যেখানে বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছে টাটা, সেখানে নরেন্দ্র মোদী এক স্বাক্ষরে ১১০০ একর জমি দিয়েছেন। কারখানায় যেতে মূল মহাসড়কের সঙ্গে বিশাল চারলেনের সংযোগ সড়ক স্থাপন করে দিয়েছেন।
গত কয়েকদিনে গুজরাটের বিভিন্ন শহর, গ্রাম ও শিল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরিতে গুজরাটের বিকল্প কোনো রাজ্য নেই। গুজরাট একমাত্র রাজ্য যার সারা প্রদেশে ২২০০ কিলোমিটার গ্যাস গ্রিড লাইন রয়েছে। রাজ্যের ৮৭.৯ শতাংশ সড়ক ওপরে এসফল্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ৮৫ শতাংশ গ্রামের সঙ্গে প্রদেশের বড় বড় সড়কের সংযুক্তি রয়েছে। ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব গ্রামের অধিবাসীরা ২৪ ঘণ্টার জন্যই বিদ্যুৎ পেয়ে থাকেন। এখানে লোড শেডিং বলে কোনো শব্দ নেই। গুজরাটই প্রথম দেশব্যাপী গ্যাস ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করে। এখান থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুতের পরিমাণ পুরো ভারতের মোট বিদ্যুতের ৮ শতাংশ।
সুরাতের কাকরাপাড়ের পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করা বিদ্যুৎ ও ভারতের মোট বিদ্যুতের এক শতাংশ।
গুজরাটে ১৩ হাজার ২৫৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে দুই হাজার মিলিয়ন ইউনিটের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গুজরাট সরকার পার্শ্ববর্তী রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধপ্রদেশ, হরিয়ানা (দিল্লি), কর্নাটক, ছত্রিশগড়, উত্তরখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে বিক্রি করে।
ভারতের ১২ হাজার ৪৮৯ মেগাওয়াট মোট নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ১৪ শতাংশই আসে গুজরাট থেকে। রাজ্য সৌর বিদ্যুতের উন্নয়নের ব্যাপকভাবে কাজ করেছে। ভারতের সবচেয়ে বেশি সৌরবিদ্যুতের উৎপাদকও গুজরাট। এরই মধ্যে তারা এক হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুতের উৎপাদক। এই খাতে প্রদেশের সরকার ১২০ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি বিনিয়োগ আশা করছে। যার মাধ্যমে ৫০০০ লোকের কর্মসংস্থানও হবে।
** গুজরাটে গ্রামে গ্রামে উন্নয়ন, ইন্টারনেট
** বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যবন্ধনে এবি ব্যাংকের মুম্বাই শাখা
** সবরমতির তীরে প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীত
** নর্মদার পানিতে স্বচ্ছ সবরমতি, মেঘনার পানিতে বুড়িগঙ্গা কবে?
** মোদীর হাতে ‘সবরমতি’র নতুন প্রাণ
** মোদীর গুজরাট উন্নয়নের আইকন ‘গিফটসিটি’
** চকচকে পরিপাটি ‘গান্ধীনগর’
** আহমেদাবাদ থেকে বাংলাদেশ যাচ্ছে ব্লাড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
** ঘুরে আসি আজমীর
** দিল্লি প্রেসক্লাবে সাবসিডি নেই!
** দিল্লির রাতে সস্তা দোকানিরা...
** মাকরানার হোয়াইট মার্বেলেই অনিন্দ্য তাজমহল
** দিল্লির আশীর্বাদ দিল্লি মেট্রো,ঢাকা মেট্রো কবে
** অ্যারাভেলি পর্বতে ঘেরা ভ্রাতৃত্ব
** ৩৬ ঘণ্টার বিচিত্র রূপ!
** ইন্টারনেটে বাংলাদেশ এগিয়ে
** সেই তো আমরাই!
** লাইফলাইন অব ইন্ডিয়া
** দিল্লি কত দূর?
** ভারতীয় ইমিগ্রেশনে বাংলাদেশের মর্যাদা
** গ্রীনলাইনে ভুগতে ভুগতে কলকাতা
** দিল্লি নয়, মোদী আছেন গুজরাটেই
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৪