ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কার্গিল যুদ্ধের সময়

ভারতীয়ের দেওয়া ভালভে বেঁচেছিল পাকিস্তানি কিশোর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
ভারতীয়ের দেওয়া ভালভে বেঁচেছিল পাকিস্তানি কিশোর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: সালটা ১৯৯৯, চলছে কার্গিল যুদ্ধ। আর সেই সময়ে এক পাকিস্তানি কিশোরের প্রাণ বাঁচাতে আরেকটা যুদ্ধ করছিলেন ভারতের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠী।

সীমান্তে যখন গুলির বিনিময়ে চলছে গুলি, ঠিক সেই সময়ে এক ভারতীয়ের দেওয়া হৃদযন্ত্রের ভালভে জীবন ফিরে পেয়েছিল ওই পাকিস্তানি কিশোর।

যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাকিস্তান সফর নিয়ে ভারত তথা গোটা এশিয়ায় আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে, সেই সময় এ গল্পটি শুনিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার থেকে বহু মানুষ কলকাতা তথা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করাতে আসেন। ঠিক সেভাবেই পাকিস্তান থেকেও বেশ কিছু মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে আসেন।

শুধু তাই নয়, মানবিকতার এ আন্দোলনে ভারতের বহু চিকিৎসক প্রতিনিয়ত পাকিস্তানের গ্রামে যান। সেখানেই তার মেডিকেল ক্যাম্প করেন। ওষুধ, স্টেথোস্কোপসহ আরও অনেক চিকিৎসার জিনিসপত্র ভারতীয় চিকিৎসকরা সেখানে দিয়ে আসেন।

ভারতের প্রথম সারির দৈনিক ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’- এর করা একটি পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে, লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য অন্তত ৭০ শতাংশ রোগী আসেন ভারতে। অঙ্কটা অবাক করার মতোই।

সূত্রে জানা গেছে, ভারতের অন্যতম বিখ্যাত বেসরকারি হাসপাতাল ‘অ্যাপেলো হাসপাতাল’-এ  বিদেশি রোগীদের মধ্যে নেপাল এবং বাংলাদেশের রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও প্রতি মাসে প্রায় ৫০ জন পাকিস্তানি রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন।

এছাড়াও দেবী শেঠী পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে বেশ কিছু পাকিস্তানি নাগরিক তাদের চিকিৎসা করাতে আসেন বলেও জানা গেছে।

গত ২০ মে পাকিস্তানের পত্রিকা ‘ডি ডন’-এর একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে প্রায় ৫ শতাধিক পাকিস্তানি রোগী লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছেন ভারতে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একটি অপারেশনেই শেষ হয়ে যায় না চিকিৎসা। রোগীর নিয়মিত খোঁজ-খবর নেওয়া হয় হাসপাতাল বা চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে। গত বছর পাকিস্তানের এক শিশু আজিজের জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার ঘটনা ভারতের মিডিয়াগুলোতে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছিল।

সহজে পাওয়া যায় না এমন কিছু ওষুধ পাঠিয়েও দেওয়া হয়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে যখন কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে বিভিন্ন মঞ্চে। সেই সময় সংবাদ মাধ্যমের নজরের আড়ালে আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের মধ্যে না থেকে প্রায় নিঃশব্দে প্রচারের আড়ালে থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এক আত্মীয়ের সম্পর্ক গড়ে তুলছেন এ চিকিৎসকরা। এ প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
ভিএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।