ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারত-আমেরিকা পরস্পরের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৬
ভারত-আমেরিকা পরস্পরের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করবে

কলকাতা: গত প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে  আমেরিকার একাধিকবারের অনুরোধ এবং ভারতের তরফে দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সোমবার (২৯ আগস্ট) পেন্টাগনে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে ‘লেমোয়া’ নামে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।

‘লেমোয়া’ বা  লজিস্টিক এক্সচেঞ্জ মেমোরেন্ডাম অফ এগ্রিমেন্ট-এর ফলে ভারত এবং আমেরিকার সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।

দুই দেশ পরস্পরের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে। একে অপরের সামরিক ঘাঁটি থেকে মিলবে খাদ্য-বস্ত্র থেকে চিকিৎসা পরিষেবা। জ্বালানি সংগ্রহ থেকে সামরিক যান মেরামতিতে একে অপরের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে দুটি দেশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তির ফলে সন্ত্রাস মোকাবিলা, সমুদ্র নিরাপত্তা ও বিশেষ অভিযানের ক্ষেত্রে দু’দেশই সুবিধা পাবে। সামগ্রিকভাবে আপৎকালীন মানবিক সাহায্য ও ত্রাণকাজ আরও দ্রুতগতিতে করা সম্ভব হবে।

তবে কোনও দেশ অপরের মাটিতে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলতে পারবে না। সামরিক অভিযানের জন্েও দুই দেশ একে অন্যের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারবে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে ভারত এবং আমেরিকার মধ্য বৈদেশিক সম্পর্কই শুধু যে ভাল হবে এমন নয়, বরং প্রতিরক্ষা-গবেষণার ক্ষেত্রে বাড়তি উদ্দীপনা যোগাবে নতুন এই  চুক্তি।
এর আগেই আমেরিকার তরফে এই ধরনের চুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। ভারতের  স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে জহরলাল নেহেরুর সময় থেকেই থেকেই ভারত নির্জোট আন্দোলনে (‘নন-অ্যালাইনড মুভমেন্ট’) নিজের অনড় অবস্থান ধরে রেখেছিল।

অর্থাৎ আমেরিকা বা রাশিয়া কোনও দেশের সঙ্গেই কোনও সামরিক জোটে যাবে না ভারত। পরবর্তী সময়ে ইন্দিরা গান্ধীও সেই নীতিই বজায় রেখেছিলেন। যদিও সেই সময়ে ভারত আমেরিকার চেয়ে বরং সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমানে রাশিয়া) দিকেই ঝুঁকেছিল।
তবে ইরাকযুদ্ধের সময় ভারত সরকারের কাছে আমেরিকা এই একই ধরনের সাহায্য চেয়েছিল। সেই সময়ও জাতীয় কংগ্রেসের চাপে এই ধরনের পদক্ষেপ থেকে সরে থাকতে বাধ্য হন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী  চন্দ্রশেখর।

বর্তমান চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এই চুক্তি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের তরফে কোনো কড়া মন্তব্য আসেনি। এমন কি ভারতের বাম দলগুলির তরফেও এখন পর্যন্ত কোনো বড় মাপের বিরোধিতা লক্ষ্য করা যায়নি।

যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, এই চুক্তির ভাল দিক থাকলেও এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীন ও পাকিস্তান নিজেদের সম্পর্ককে আরও মজবুত ভিত্তি দেবে। মনে করা হচ্ছে, আগামী দিনে এই চুক্তিকে ঘিরে এই উপমহাদেশীয় অঞ্চলের রাজনীতিতে কিছু লক্ষণীয় পরিবর্তেও আসতে পারে। দেখার বিষয়, এই ধরনের পরিবর্তন উপমহাদেশীয় রাজনীতিকে কোন খাতে প্রবাহিত করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৬
ভিএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।