ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মমতার চাপেই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বাতিল করলেন মনমোহন

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১১
মমতার চাপেই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বাতিল করলেন মনমোহন

কলকাতা: ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরে প্রস্তাবিত তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির চুক্তি নিয়ে আপত্তির কাছে নতি স্বীকার করলেন মনমোহন।



এদিন সকাল থেকে দিল্লির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বার বার মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। অবশেষে দুপুরে চুক্তিটি বাতিল করা হয় বলে মহাকরণে সংবাদ আসে।

আবার পুনরায় মমতাকে বোঝানোর চেষ্ঠা চলছে। তাকে বাংলাদেশে সফরে নিয়ে গেয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ রক্ষা করার।

এর ফলে ছিটমহল ও তিনবিঘা করিডোর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ক চুক্তিগুলিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। রাজনৈতিক মহল মনে করছে মমতাকে বাদ দিয়ে যেমন তিস্তা চুক্তি সম্ভব নয়, তেমনই ছিটমহল ও তিনবিঘা প্রশ্নেও মনমোহন কোনো সিদ্ধান্ত এই সফরে নিতে পারবেন না।

নয়াদিল্লি সূত্রে জানা গেছে, মমতার না যাওয়ার কথা শুনে মনমোহন সিং সোমবার রাতে দফায় দফায় বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। কথা বলেন কংগ্রেস রাজনীতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোলার বলে পরিচিত অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সাথে। সূত্রটি আরও জানাচ্ছে, প্রণব মুখার্জি মমতাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে তৃণমলের মন্ত্রী ও সাংসদদের সঙ্গে বার বার কথা বলেন।

এদিন মহাকরণে সকাল সাড়ে ১০টায় দিল্লির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফ্যাক্স আসে। তাতে বলা হয়, এই চুক্তি নিয়ে পর্যালোচনার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে মমতার দাবি মানা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী একান্তভাবে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী যেন ঢাকায় যান।

এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় দিল্লিকে, তার পক্ষে এই চুক্তি মানা সম্ভব নয়। তাই তিনি ঢাকা যাবেন না।

তৃণমুল সুত্রে জানা গেছে, মমতার নির্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দলের মন্ত্রী ও সাংসদরা প্রণব মুখার্জিকে এদিন সকালে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তারা লোকসভায় দাঁড়িয়ে এর বিরোধিতা করবেন। প্রয়োজনে পশ্চিমবঙ্গের রাজপথে নেমে বিরোধিতা করবেন। এর ফলে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হবে তার দায় কংগ্রেসকে নিতে হবে।

সম্প্রতি বিভিন্ন দুর্নীতি ও আন্না হাজারে ইস্যুতে জেরবার কংগ্রেস তার জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিকদলকে অন্তত এই ইস্যুতে সরাসরি বিরোধিতায় যেতে দিতে নারাজ। কারণ এখনও তারা জানেন না এই ইস্যুতে বিরোধী দল বাম ও বিজেপি কী ভূমিকা নেবে। তাই সবদিকে বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত মমতার কাছে নতি স্বীকার করলেন মনমোহন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।