ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বিএনপির জন্য নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে না: লিটন

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
বিএনপির জন্য নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে না: লিটন

কলকাতা: আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। ভবিষ্যৎ নিয়ে যদি বিরোধীদের সঠিক চিন্তা থাকে, তাহলে তারা নির্বাচনে আসবে।

কারো জন্য তো আর নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে না।
 
বুধবার (১৭ আগস্ট) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন কলকাতায় এক আলোচনায় সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।  

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭-তম শাহাদাত বার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কলকাতার পার্কস্ট্রিট সংলগ্ন 'দ্য বেঙ্গল ক্লাবে' ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।  

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কলকাতাস্থ বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস প্রমুখ।
 
এএইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। সেই জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী সহনশীলতার পরিচয় দিয়েই যাচ্ছেন। যেটুকু আন্দোলন তারা করছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কাউকে গ্রেফতার না, কোনো মারধর না। তারা যা বলছে, যা করছে, করুক। তবে সেটা একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকতে হবে। আমার মনে হয়, ভবিষ্যৎ নিয়ে যদি বিরোধীদের সঠিক চিন্তা থাকে, তাহলে তারা নির্বাচনে আসবে। কারো জন্য তো আর নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে না।
 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী বাংলাদেশে নানাভাবে পালন করেছি। কিন্তু কলকাতায় পালন করার এক আলাদা অনুভূতি আছে। বঙ্গবন্ধু সঙ্গে কলকাতার আত্মিক সম্পর্ক। সেই দিক থেকে কলকাতায় তাঁকে স্মরণ করা এক আলাদ অনুভূতি।
 
ভারত-বাংলাদেশ নৌ চুক্তি নিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নানা দিক থেকে নৌ যোগাযোগ শুরু হয়েছে। ট্রেন যোগাযোগ চালু হয়েছে অনেকগুলি রুটে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এবং শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে যে ৭টি রুটে নৌ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল- তার মধ্যে একটি রাজশাহীর পাশ দিয়ে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান হয়ে রাজশাহী হয়ে ঈশ্বরদী, আরিচা হয়ে ঢাকায়। জলপথে এই রুটকে আমরা খুব শিগগিরই চালু করতে চাচ্ছি।
 
বিষয়টি নিয়ে দু'দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, ওই স্থান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। আমাদের নৌ পরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এই রুটে চালু করার কারণ, ধুলিয়ানের যে কালো এবং মজবুত পাথর পাওয়া যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর লাখ লাখ টন সেই পাথর লাগে। পদ্মা সেতুতেও ওই পাথর ব্যবহার হয়েছে। ট্রাকে করে এই পাথর বাংলাদেশে আনতে হয় এবং তাতে খরচ অনেক খরচ পড়ে যায়, ব্যবসায়ীরাও খুব একটা লাভবান হয় না। সেক্ষেত্রে যদি নৌপথে ঢাকায় আনতে পারি অর্থাৎ রাজশাহী হয়ে ঢাকা পর্যন্ত, তবে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন। সরকারও লাভ পাবে।
 
রাজশাহীর মেয়র বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী এই রুট যদি দিয়ে আমরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে আদা, রসুনসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে যাই, কাজেই এই রুটটি চালু হলে যদিও এটি সময় সাপেক্ষ তবুও অনেক দূর কাজ এগিয়েছে বলে আমি জানি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বলে রেখেছি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভারতীয় কর্মকর্তাদেরও বিষয়টি যথাযথ স্থানে উপস্থাপনের আর্জি জানান তিনি।
 
আমিনুল ইসলাম বলেন, সারা পৃথিবীতে যেখানেই বাঙালি আছে সেখানেই বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী পালন হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশবাসী তা পালন করে না। ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ করে কলকাতা। বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতায় বঙ্গবন্ধু প্রেমিরাও দিনটি পালন করে থাকেন। কলকাতায় আজ যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে, আমি মনের গহীন থেকে বিশ্বাস করি এটি ভারত এবং বাংলাদেশের বর্তমান যে বন্ডিং আছে তা আরও শক্তিশালী করবে এবং তা সামনের দিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
 
বর্তমান পরিস্থিতি ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে রাজনীতি করি এবং আমি চেষ্টা করি মানুষের মন বোঝার। আমার সেই উপলব্ধির জায়গা থেকে হলফ করে বলতে পারি, যে গোটা বিশ্বের আর্থিক মন্দার সঙ্গে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তথাকথিত বিরোধী রাজনৈতিক দল যে কাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করছে সেটা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই সীমিত। বৃহত্তর জনগোষ্ঠী অর্থাৎ যাদের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের ভোটের ফলাফল, সেই জনগোষ্ঠীর কাছে বিরোধীদের আবেদন পৌঁছাবে না। কারণ অতীতে তারা ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু প্রান্তিক জনগণের জন্য কী কাজ করেছে, সেরকম উদাহরণ তারা দিতে পারবে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জীবনযাত্রার মান পাল্টে দিয়েছেন। যে কারণে তারা মিছিল মিটিং এর নামে ভাঙচুর এবং সন্ত্রাসের চেষ্টা করলেও সেখানে কিন্তু বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কোনো অংশগ্রহণ নেই।
 
বিএনপি কি এবার নির্বাচনে অংশ নেবে না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না, সেটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে আমি মনে করি বিএনপি যদি নিজেদের গণতান্ত্রিক দল হিসেবে মনে করে, ওরা যদি মনে করে অস্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসব না, যেমন ভাবে জিয়াউর রহমান বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তা যদি বিশ্বাস না করে তাহলে নির্বাচনে না আসার কোনো বিকল্প নেই। আর জনগণ তাদের পছন্দ করলে তারা কেন নির্বাচনে আসবে না? আওয়ামী লীগ দল হিসেবে আমাদের কোনো দায় নেই তাদের নির্বাচনে নিয়ে আসার। তারা আসলে আমরা খুশি হব।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
ভিএস/ইইউডি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।