ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

ক্রেতা আকর্ষণে বিভিন্ন কৌশল, শীর্ষে ইলেকট্রনিক্স পণ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩
ক্রেতা আকর্ষণে বিভিন্ন কৌশল, শীর্ষে ইলেকট্রনিক্স পণ্য

ঢাকা: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাসব্যাপী আয়োজনের শুরুতে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের কিছুটা ভাটা ছিল। তবে মাসের মাঝামাঝিতে এসে জমে উঠেছে মেলা।

এ অবস্থায় ক্রেতা আকর্ষণে বিক্রেতারা অবলম্বন করছেন বিভিন্ন কৌশল। বাণিজ্য মেলাকে ঘিরে নানা পণ্যের সমাহার ঘটিয়েছে মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। একই সঙ্গে এসব পণ্যের বিক্রি বাড়াতে স্টলগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে নানা উপহার এবং বিশেষ মূল্য ছাড়।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সরেজমিনে বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এবং মেলায় অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে, মেলায় গৃহস্থালি পণ্য থেকে শুরু করে পোশাকে রয়েছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড়। খাবারের আইটেমের মধ্যে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের প্যাকেট জাত খাবারের পণ্যগুলো বিভিন্ন প্যাকেজ আকারে বিক্রি করছেন (দুইটার সঙ্গে একটি ফ্রি)। এছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিগুলো মেলায় তাদের পণ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন।

আবদুল্লাহ আল মুন্না এবং হাসি আক্তার দম্পতি বাণিজ্য মেলায় এসেছেন সানাড়পাড় এলাকা থেকে। কিছুদিন আগে বিয়ে হওয়ায় নতুন সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য কিনতে এসেছেন মেলায়। মেলায় এক ছাদের নিচে সব পণ্য পাওয়ায় খুশি তারা। মেলা থেকে বাসার জন্য ব্লেন্ডার, কেটলি, আয়রন মেশিন এবং একটি ড্রেসিং টেবিল কিনেছেন।

পছন্দের পণ্য পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে হাসি আক্তার বাংলা নিউজকে বলেন, এখানে যেহেতু সব কিছু এক ছাদের নিচে পাওয়া যায় এবং সময় কম লাগে তাই আমরা অনেক খুশি। মোটামুটি মেলায় অনেক কিছু দেখলাম। এর আগেও একদিন মেলায় এসেছিলাম। তখন ঘুরে ঘুরে দেখে দামের সম্পর্কে ধারণা নিয়ে গিয়েছিলাম। আজ মেলায় এসেছি পছন্দের কিছু ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য কিনতে। তবে বর্তমানে আমাদের দেশের তৈরি ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলো দামেও খুব সস্তা এবং মানেও ভালো।

এ দম্পতির মতো বেশির ভাগ ক্রেতারই নজর কারছে দেশের তৈরি রেফ্রিজারেটর, হিটার, আয়রন ও ব্লেন্ডার মেশিন। বাণিজ্য মেলায় অন্যান্য স্টলগুলো যখন ক্রেতার ভিড় কিছুটা কম। তখন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের প্যাভিলিয়নগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বলে দেয় ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের প্রতি তাদের আলাদা আকর্ষণের কথা।

বর্তমানে দেশে অনেক ভালো পণ্য তৈরি হচ্ছে এবং এসব পণ্য কেনার পরামর্শ দেন মেলায় ঘুরতে আসা বেশির ভাগ সচেতন ক্রেতারা। বিদেশি ব্রান্ডের প্রতি ঝোঁক থাকলেও দেশীয় এসব ইলেকট্রনিক্স পণ্যের প্রতি আস্থা রাখছেন ক্রেতারা। তাই দেশীয় পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখার পরামর্শ এসব ক্রেতাদের।

এদিকে পণ্যের মাণ ঠিক রেখে ক্রেতাদের সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে দেশীয় ব্রান্ডের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবহারে ক্রেতাদের উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা। এ জন্য বিভিন্ন কোম্পানি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন। পাশাপাশি ক্যাশ বেকের ও অফার রয়েছে স্টলগুলোতে।

বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের বিক্রয় প্রতিনিধি সুমন বাংলানিউজকে বলেন, মেলা উপলক্ষে ক্রেতাদের কাছে এসব পণ্য পরিচিত করাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। মেলায় আমাদের স্টলে ক্রেতাদের আকর্ষণ স্মার্ট ফ্রিজ এবং এসি তে। কারণ এগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এছাড়া আমরা মেলা থেকে হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে মেলার শেষ ১০ দিনে বেশি পণ্য বিক্রির লক্ষ্য থাকে বিক্রেতাদের। সে অনুযায়ী আগামীতে বিক্রি ও ছাড় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বেশির ভাগ দর্শনার্থী মেলায় আসে এটা ভেবে যে এখন থেকে কম মূল্যে জিনিস কিনতে পারবেন। মেলার শেষ দশ দিনে সব বিক্রেতাই চায় তার সব পণ্য বিক্রি করতে এবং সে সময় তারা সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে থাকে। বিক্রেতারা চায় না যে কোনো পণ্য তারা বাড়িতে নিয়ে যাক।

মেলা প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষকে পৌঁছে দিতে বিআরটিসি শাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সার্ভিস তিনশ ফিট কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচল বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যাতায়াত করবে। যা সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত চলবে। যার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫টাকা করে। মেলা উপলক্ষে সর্বমোট ১৫০ বিআরটিসি বাস প্রস্তুত করা হয়েছে। এ বাসগুলো পরিচালনার জন্য ৩০০ চালক প্রস্তুত আছে এমনটাই জানিয়েছেন বিআরটিসি শাটল সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক অফিসার জাফর আহমেদ।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে মেলা শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলায় প্রবেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৪০ টাকার টিকিট কাটতে হবে। শিশুদের জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩
ইএসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।