ঢাকা: তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য সোলার পিভি সিস্টেমের সরঞ্জামাদি আমদানিতে শুল্ক রেয়াতিহারে সুযোগ প্রদান চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে পোশাক প্রস্তুতকারক রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে। গত অর্থবছরে আমরা বিশ্বের ১৬৭ দেশে ৪২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করেছি। এই শিল্পটিতে প্রায় ৪ মিলিয়ন কর্মী কর্মরত রয়েছেন এবং আমাদের জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) ১১ শতাংশ ও সামগ্রিক রপ্তানিতে ৮৪ শতাংশ অবদান রাখছে।
দেশে জ্বালানি সংকট নিরসনের জন্য সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি শিল্পখাতে ব্যবহারের জন্য উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করছেন। কিন্তু সোলার সিস্টেম শিল্প প্রতিষ্ঠানে স্থাপনের ক্ষেত্রে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ থাকার কারণে উদ্যোক্তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে জ্বালানি সাশ্রয় করা এবং সবুজ কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এছাড়াও বিদেশি ক্রেতারা শিল্প কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্সের আওতাভুক্ত হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছেন। শিল্প কারখানায় সোলার প্যানেল সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব। এছাড়াও বিদেশি ক্রেতারা কমপ্লায়েন্স কারখানার মাধ্যমে পোশাক উৎপাদন করে আমদানি করতে আগ্রহী।
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ভিশন নিয়েছে। জ্বালানি মূল্য বাড়ার ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার সহজলভ্য হলে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পেয়ে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়বে। সোলার পিভি সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে তৈরি পোশাক কারখানা গুলো নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয়, কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ভিশন অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
এছাড়াও বিজিএমইএ ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আমাদের পোশাক কারখানাগুলো ইতোমধ্যে সোলার প্যানেল ভিত্তিক নবায়নযোগ্য এনার্জি প্ল্যান্ট স্থাপনে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু সোলার প্যানেল সিস্টেমের সরঞ্জামাদির উচ্চমাত্রার শুল্ককরাদির কারণে দেশের নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারের যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
চিঠিতে একটি তালিকা উল্লেখ করেছে বিজিএমইএ। তালিকায় উল্লেখিত সরঞ্জাম এবং এর ওপর আরোপিত ও প্রস্তাবিত শুল্কহার নিম্নরূপ:
সোলার প্যানেল এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে বর্তমান শুল্ক ২৬.২ শতাংশ, ইনভার্টার এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ৩৭ শতাংশ, অ্যালুমিনিয়াম স্ট্রাকচার এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ৫৮.৬ শতাংশ, ওয়াকওয়ে এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ৫৮.৬ শতাংশ, ডিসি ক্যাবল এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ৫৮.৬ শতাংশ, ফুয়েল সেভার কন্টোলার ৩৭ শতাংশ, সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডাটা অ্যাকুইজিশন এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতিতে বর্তমানে ৩৭ শতাংশ কর আরোপ করা হয়। এর পরিবর্তে সবগুলো সরঞ্জামের ওপর ১ শতাংশ হারে শুল্করেয়াতি চেয়েছে বিজিএমইএ।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৩
এমকে/এসআরএস