ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বঙ্গবাজার: পাইকারি বিক্রেতাদের ভরসা এখন খুচরা ক্রেতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
বঙ্গবাজার: পাইকারি বিক্রেতাদের ভরসা এখন খুচরা ক্রেতা

ঢাকা: ফারুক আলী (৫০)। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় জননী গার্মেন্টস নামে দুটি দোকান ও একটি গোডাউন ছিল তার।

অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে সব, সেই সঙ্গে তার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে তার প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

তিনি ছাড়াও তার ১১ জন ভাইয়ের গোডাউন ও দোকান ছিল এই কমপ্লেক্সে। ভাইদেরও সবগুলো দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যার মধ্যে তার এক ভাইয়ের দোকানের কিছু মাল আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে। নিঃস্ব হয়ে ফারুক আলী এখন তার এক ভাইয়ের দোকানে বেচে যাওয়া কাপড়গুলো বিক্রি করছেন। এখানে তিনি রোজ হিসেবে কাজ করেন। আগে যেখানে কাপড় পাইকারি বিক্রি করতেন সেখানে এখন খুচরা বিক্রি করছেন।  

রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানে অস্থায়ী ভিত্তিতে চৌকির ওপর বসেছে বাজার। তবে, আগের মতো জমজমাট নয়। আর তাই এখানকার পাইকারি বিক্রেতাদের ভরসা এখন খুচরা ক্রেতা।

মঙ্গলবার সরেজমিনে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ১ দশমিক ৭৯ একর খোলা জায়গায় অস্থায়ীভাবে চৌকি বসিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাক বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।  

ফারুক আলী জানান, আমাদের আগে যারা পাইকারি ক্রেতা ছিল, তারা এখন জানেন, আমাদের কাছে আগের মতো মালামাল নেই। তাই ক্রেতা কমে গেছে।  

একই আক্ষেপের সুর শোনা গেলো অন্য ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। তবে, ধীরে-ধীরে চেনারূপে ফেরার চেষ্টায় আছেন ব্যবসায়ীরা৷ এদিন ঘুরে দেখা গেছে, বেশ জমজমাট বঙ্গবাজারের অস্থায়ী এই মার্কেট। সেখানে বিক্রেতেরা হাঁক-ডাক ছাড়ছেন। ক্রেতারাও নিজের পছন্দের পোশাকটি কিনছেন৷ 

জেসমিন নামের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারের জন্য আগে বঙ্গবাজার থেকে কেনাকাটা করতাম। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও এসেছিলাম। কিন্তু, আগের মতো মালামাল নেই।  

এদিকে, পুড়ে যাওয়ার পর মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে এনেক্সকো টাওয়ারে। ইট-সুরকি নিয়ে রাতেও কাজ করতে দেখা গেছে মিস্ত্রীদের। এখানকার ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা দ্রুততম সময়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তারা। আর, এজন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তাও চান তারা।  

গত ৪ এপ্রিল ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটে বঙ্গবাজারে। আগুন নেভাতে ঝাপিয়ে পড়ে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার সবগুলো ইউনিট। যোগ দেয় বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। প্রায় ৬ ঘণ্টা পর আগুনের লেলিহান শিখা নিয়ন্ত্রণে আনলেও, পুরোপুরি নির্বাপন করতে সময় লেগে যায় ৭৫ ঘণ্টা। এই ঘটনায় বঙ্গবাজারের চারটি র্মাকেট পুরোপুরি ও তিনটি মার্কেট অংশিক পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির হিসাবে অগ্নিকাণ্ডে ৩ হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।  

এসব ব্যবসায়ীরা যাতে ঈদের আগে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন বা অন্তত থাকা খাওয়ার খরচ জোগার করতে পারেন এজন্য তাদের অস্থায়ীভাবে দোকান পরিচালনার সুযোগ করে দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।
 

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
ইএসএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।