ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সব ধরনের ঋণে সুদহার বাড়ল

সিনিয়র করেসপেন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
সব ধরনের ঋণে সুদহার বাড়ল

ঢাকা: নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার দিন রোববার সুদহারের ক্যাপ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এর একদিন পরই সোমবার (১৯ জুন) নতুন সুদহারের পদ্ধতি সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব ধরনের ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়বে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সুদহার নির্ধারণ হবে ১৮২ দিন বা মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের ওপর। সেই সুদ কত হবে, তা–ও জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর ফলে কৃষি, এসএমই, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণসহ সব ধরনের ঋণের সুদ বাড়বে, যা কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে।

রোববার মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, যখন সুদহার ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ ছিল, তখন ব্যবসার খরচ কমাতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তখন বিদেশি ঋণ ২ শতাংশ সুদে পাওয়া যেত। আবার বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুদহার বাড়ানো প্রয়োজন। আমরা সরকারকে এটা বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই আবার ঋণের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে, ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার হবে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। যার নাম দিয়েছে স্মার্ট বা সিক্স মানথ মোভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল। সে অনুযায়ী ব্যাংকঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর সিএমএসএমই ও ভোক্তাঋণের আওতাধীন ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি কেনার ঋণে আরও ১ শতাংশ তদারকি মাশুল যুক্ত হবে। ফলে এসব ঋণের সুদহার হবে ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

তবে কৃষি ও পল্লি ঋণের সুদহার হবে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এ ধরনের ঋণের সুদহার ট্রেজারি বিলের গড় সুদের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। বর্তমানে কৃষিঋণে সুদহার ৮ শতাংশ। অন্য ঋণে সুদহার ৯ শতাংশ। আর ক্রেডিট কার্ডে সুদহার আগের মতো ২০ শতাংশ বহাল থাকবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো সুদ আরোপ করার পর ছয় মাসের মধ্যে তা পরিবর্তন করা যাবে না। এর মধ্যে সুদহার বাড়লেও ব্যাংক গ্রাহকের সুদ বাড়াতে পারবে না। আবার সুদহার কমলেও গ্রাহকের সুদ কমবে না। কোনো ঋণ মেয়াদের আগে সমন্বয় করতে চাইলে সিএমএসএমই ও ভোক্তাঋণের আওতাধীন ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি ক্রয় ঋণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ তদারকি মাশুল আনুপাতিক হারে আদায় করতে হবে।

বছরের মাঝখানে কেউ ঋণ শোধ করে দিতে চাইলে তার ঋণের ওপর দশমিক ৫০ শতাংশ হারে তদারকি মাশুল নিতে পারবে ব্যাংক।

ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকেও একই নিয়মে মুনাফা হিসাব করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ৯ শতাংশ সুদ বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ব্যাংক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে ৯ শতাংশ সুদহার কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ প্রজ্ঞাপনের পর ব্যাংকের ঋণের সুদহার বাড়লো। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সুদহারের সীমা বেঁধে দেওয়া থেকে সরে এলো বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এখনো তা নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার মধ্যেই থেকে গেল; যদিও পুরোপুরি বাজারভিত্তিক হলো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।