ঢাকা: বিশ্ব দরবারে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খাতিরে কেউ কাউকে কিছু দেবে না, গুণগত মান ঠিক করতে হবে এবং প্রতিযোগিতাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে ও সাফল্য আসবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শনিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) হল-১ এর ওয়ালটন আয়োজিত এটিএস এক্সপো-২০২৩- এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পৃথিবী কারো একার নয়, সবার জন্য পৃথিবী। এখানে আমাদের অধিকার আছে। শুধু একটা বিষয় যে, আমাদের গুণগত মান ঠিক করতে হবে, খাতিরে কেউ কাউকে কিছু দেবে না। পরিশ্রম করে সে জায়গা আমাদের অর্জন করতে হবে। আমার মনে হয়, ওয়ালটনের মাধ্যমে আমরা সে স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি। আমাদের দেশের কোন সংস্থা বা কোম্পানি যখন বিশ্বের দরবারে সফলতা অর্জন করে তখন আমার খুব ভালো লাগে। আজ আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পরিশ্রম করে সফলতা অর্জন করেছে। আমি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে যখন দেশের এমন সফলতা অর্জন দেখতে পাই তখন খুবই ভালো লাগে।
তিনি বলেন, আমাদের সন্তানরা সফলতা অর্জন করতে গিয়ে যখন বাধা বা সমস্যায় পড়ে তখন আমাদের সরকারের দায়িত্ব হলো তাদের প্রটেকশন দেওয়া। আমরা পলিসিসহ বিভিন্নভাবে ব্যবসায়ীদের সাহায্য করে থাকি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান আমাদের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে। দেশে অনেক ব্যবসায়ী গ্রুপ আছে যাদের প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। আর আমরা মনে করি, প্রতিযোগিতাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, আমাদের সময় যখন ব্যবসা করতাম তখন বাংলাদেশে যে কিছু তৈরি হবে তা আমরা কখনই চিন্তা করতে পারিনি। কিন্তু আজকে বাংলাদেশে ওয়ালটন নিজেরাই তা করছে। পাশাপাশি তারা ইনোভেশনও করছে। আর যারা ইনোভেশন করে তারা অনেক দূরে এগিয়ে যায়। আর সেখানে ওয়ালটন হাই টেক টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছে। আমি মনে করি, ওয়ালটনই হয়তো দেশের প্রথম এআই টেকনোলজি এবং রোবটিক্স নিয়ে কাজ করবে। আমি মনে করি, ওয়ালটন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা করবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ ফয়জুল আমিন বলেন, ওয়ালটন দেশের সর্বোচ্চ করদাতা একটি প্রতিষ্ঠান। এ মেলার মাধ্যমে ওয়ালটন দেশের বাজারে আমদানি নির্ভরতা দূর করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ওয়ালটন যদি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক তৈরি করে তাহলে দেশে যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চিন্তা করছে সেটা অনেক এগিয়ে যাবে। কারণ দেশের অনেক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্ররা পাস করে দেশের বাইরে চলে যায়। সে জায়গায় ওয়ালটন যদি তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বা তাদের স্কলারশিপ দেয় তাহলে তারা দেশে থাকবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রপ্তানিতে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন সময় পলিসি সাপোর্ট দিয়ে থাকি। গত ১৫ বছর আগেও আমরা চিন্তা করতে পারিনি যে রপ্তানিতে দেশ এত এগিয়ে যাবে। ওয়ালটন এই বিষয়ে অনেক বড় অবদান রেখেছে। আমি মনে করি, একটি ব্র্যান্ড পৃথিবীতে একটি দেশকে পরিচিত করতে পারবে। ওয়ালটন যে স্বপ্ন দেখছে, আগামীতে পৃথিবীর প্রধান কয়েকটি ব্র্যান্ডের মধ্যে তারা একটিতে হবে, সেই স্বপ্ন যেন সত্য হয় সে আশা করছি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ, ওয়ালটন হাই টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম এবং ওয়ালটন হাই টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিউজ্জামান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৩
ইএসএস/এএটি