ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পোল্ট্রি শিল্পে অস্থিরতা নিরসনে ফিডের দাম নির্ধারণের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২৩
পোল্ট্রি শিল্পে অস্থিরতা নিরসনে ফিডের দাম নির্ধারণের দাবি ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: পোল্ট্রি শিল্পে অস্থিরতা নিরসনে ফিডের দাম নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। পাশাপাশি মুরগির বাচ্চার দাম কমানোরও দাবি জানিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের এ সংগঠন।

বুধবার (২৩ আগস্ট) পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম কমানোর দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিপিএ'র সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার এসি দাবি জানান।  

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিপিএ এবং তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজার ডিম ব্যবসায়ী সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে সুমন হাওলাদার বলেন, বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য পোল্ট্রি শিল্পকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাদের টার্গেট ছোট ছোট খামরিদের না রাখা। তারা কখনও মুরগির বাচ্চার দাম ১০ টাকা রাখে আবার কখনো ১০০ টাকায় বিক্রি করে। এতে পোল্ট্রি শিল্পে চরম অস্থিরতা চলছে। ঠিক এ সময় সরকার পোল্ট্রি নীতিমালা ২০০৮ সংশোধন করে মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ ও চুক্তিভিত্তিক খামারকে বৈধতা দিতে যাচ্ছে। এর ফলে প্রান্তিক খামারি ও পোল্ট্রি শিল্প পুরোপুরি করপোরেটদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বলে, মুরগির বাচ্চা ও ফিডের ব্যবসায় লস করে অনেক হ্যাচারি ও ফিড মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এটি ভুল তথ্য। আসলে করপোরেটদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ছোট ছোট ফিড মিলগুলো ঝরে গেছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের খেয়াল-খুশি মতো ফিডের দাম বাড়িয়ে দিয়ে ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা ফিড ইন্ডাস্ট্রি ও ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশনকে নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে খুচরা বাজারে ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের উচিত বাজারে অভিযান না চালিয়ে বড় বড় মিল ও হ্যাচারিতে অভিযান করে ফিডের দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া ও ফিডের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া।

তিনি আরও বলেন, মুরগির বাচ্চা ও ফিডের দাম কমিয়ে যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিলে পোল্ট্রি শিল্পের অস্থিরতা নিরসন হবে। পাশাপাশি বাজারেও ডিম ও মুরগির দাম ক্রেতাদের নাগালে আসবে।

ডিম-মুরগির বাজার অস্থিরতার জন্য একমাত্র প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দায়ী মন্তব্য করে সুমন হাওলাদার বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে মনে হচ্ছে কর্পোরেটদের কর্পোরেট অফিস। পানি সম্পদ অধিদপ্তরের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের জন্য করপোরেটরা সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একদিকে বাচ্চা আমদানি আইনকে বন্ধ করেছে, অন্যদিকে চুক্তিপত্রের খামারিতে ঝুঁকছেন। এরপরে তারা আর প্রান্তিক খামারিদের কাছে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করবেন না। কন্টাক ফার্মিয়ের মাধ্যমে তারা শুধুমাত্র উৎপাদন করবে। এতে করে বাজারে ডিমও মুরগির সংকট দেখা দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বহুমুখী ডিম ব্যবসায়ী সমিতির  সভাপতি মো. আমান উল্লাহ বলেন, সরকারকে ধন্যবাদ ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সা বের করে খুচরা মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়ায়। কিন্তু সাপ্লাই চেইনে কে কত টাকা লাভ করবে তা পরিষ্কারভাবে বলা হয়নি। আমরা ডিমের দাম বাড়লেও যা লাভ করি, কমলেও তাই লাভ করি। ডিমের বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে বাজারে অভিযান না করে করপোরেট ফার্মে অভিযান করুন।

এ সময় বিপিএ'র সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক, কাপ্তান বাজার ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, নোয়াখালীর খামারি জাকির হোসেন, গাজীপুরের খামারি অনিক সরকার, সাতক্ষীরার খামারি তসলিম আলমসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।