ফরিদপুর: চলমান হরতাল-অবরোধের কারণে ফরিদপুরের ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। অনেককে ক্রেতার অভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে দেখা গেছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের দোকানের আয় থেকে সংসার চলে। আমাদের বেচাকেনা না হলে, না খেয়ে থাকতে হবে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
অবরোধের কারণে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন ও পণ্যের বিপণন। যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফরিদপুরের শিল্পখাতও। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কারও জন্যই ইতিবাচক হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
ফরিদপুর নিউ মার্কেটের পোশাক ও শাড়ি-কাপড় বিক্রেতা জয় কাজী বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান থেমে থেকে অবরোধ পরিস্থিতিতে যা বিক্রি হয় তাতে কোনোমতে দোকান খরচা উঠছে। এভাবে চললে খাবো কী? পকেট খরচাইতো উঠছে না। দিন শেষে কালেকশন জমা দিতে হয়। বেচাকেনায় মন্দাভাবের জন্য দু’দিন কালেকশন জমা দিতে পারিনি।
নিউ মার্কেটের আরেক বিক্রয়কর্মী মো. সবুজ বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। মার্কেট প্রায় ক্রেতা শূন্য। সারা দিনে মাত্র দেড় হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। অথচ, স্বাভাবিক সময়ে ১০-১৫ হাজার টাকা বিক্রি করি।
তিনি বলেন, অনেকেরই দোকানের আয় থেকে সংসার চলে। দোকানের বেচাকেনা না হলে, না খেয়ে থাকতে হবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দেশে কোনো রকম হরতাল-অবরোধ না হোক সেটাই ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা।
তিতুমীর বাজার নিউ মার্কেটের দোকান মালিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রনি বাংলানিউজকে বলেন, স্বল্প পুঁজির ব্যবসা আমাদের। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পণ্য বিক্রি কমে গেছে। এতে দোকানের কর্মচারীদের বেতন-মজুরি দিতেও অনেক ব্যবসায়ী হিমশিম খাচ্ছেন। ধারাবাহিক এ অবরোধ চলতে থাকলে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন অনেক ব্যবসায়ী।
ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ বিরতি পর আবারও অস্থির দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। শুরু হয়ে গেছে বিরোধীদলের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি জ্বালাও-পোড়াও। বিরোধীদলের এই রাজনৈতিক সহিংসতায় শঙ্কিত দেশের ব্যবসায়ীরা। এটা জনগণকে পুঁজি করে দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতি করা ছাড়া কিছু নয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় জর্জরিত। এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটলে বিষয়টি দুঃখজনক হবে। এটা পরিহার করে শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে ফিরে না এলে ব্যবসায়ীদের পথে বসা ছাড়া উপায় নেই। তাই বিরোধী রাজনৈতিক দলকে হরতাল-অবরোধ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
এসআরএস