ঢাকা: মাসে ২৫ হাজার টাকা খরচ করতে পারে এমন মানুষই আয়কর রিটার্ন দিতে পারে। দেশে এমন মানুষের সংখ্যা ৬৫ থেকে ৭০ লাখ।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) শের-ই বাংলা নগর এনবিআর ভবনে আয়কর দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ‘নতুন আয়কর আইন এবং কর পরিপালন: পরিবর্তিত প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (করনীতি) ড. সামস উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন বলেন, আয়কর সম্পর্কিত মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সঙ্গে এনবিআরের যোগাযোগ ঘাটতির কারণে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষতি হতে পারে। এজন্য যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আয়কর আইন-ভীতি কাজ করে। আইন সহজ হলে সে ভীতি দূর হতে পারে। আয়কর আইনে যে ফাঁকফোকর আছে, অন্যরা সেই সুযোগ নয়। এসব ফাঁকফোকর দূর করতে হবে।
মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বললে মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ে, মানুষ ট্যাক্স দিতে আসে। করদাতাদের সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমে সেই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পরামর্শ দেন সরকারের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রাহমাতুল মুনিম বলেন, করদাতারা কর দেওয়াকে বোঝা মনে করে; কর আদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শত্রু মনে করে। মানুষের সঙ্গে গ্যাপ থাকার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই গ্যাপ দূর করতে হবে। এজন্য মানুষকে বোঝাতে হবে, ট্যাক্সের টাকায় দেশের উন্নয়ন হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের সঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব আরোপ করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের অভাবে অন্যরা সুযোগ নিতে পারে। এতে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর অন্যপক্ষ লাভবান হবে।
রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (করনীতি) ড. সামস উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের মোট কর্মক্ষম জনশক্তির অনুপাতে ৬৫ থেকে ৭০ লাখ মানুষের আয়কর রির্টান দেওয়ার কথা। সেখান দিচ্ছে ৩৫ লাখ মানুষ। এ হিসাবে ৫০ ভাগ মানুষের কাছ থেকে আয়কর নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। বাকি ৫০ ভাগ আয়কর দিতে সক্ষম মানুষের আয়কর আদায় সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, যথাযথ কর আদায় করা সম্ভব না হলে মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তর হওয়ার পর ঝুঁকিতে পড়তে হবে। সে জন্য রাজস্ব আদায়ের যে সব ঘাটতি রয়েছে, সেগুলো সমাধান করে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে হবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, রাজস্ব বোর্ডের কোনো অ্যাসেসমেন্টের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করতে গেলে বিরোধকৃত ট্যাক্সের একটি অংশ পরিশোধ করে মামলায় যেতে হয়। মামলা রিভিশনের ক্ষেত্রেও এটা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে রিভিশন কমবে, রাজস্ব বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ