ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আর্থিক অনিয়মে জড়িত ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালক নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
আর্থিক অনিয়মে জড়িত ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালক নয়

ঢাকা: ব্যাংকে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগের নিয়ম কঠোর করতে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধনী) আইন-২০২৩-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

নতুন নিয়মে একজন পরিচালকের বয়স ন্যূনতম ৩০ বছর হতে হবে। আগে এর কোনো ধরাবাঁধা সীমা ছিল না। যিনি পরিচালক হবেন ওই ব্যক্তি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হতে পারবেন না;  কোনো জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা জড়িত নন, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এক পরিপত্রে ব্যাংক-কোম্পানির ক্ষেত্রে পরিচালক হওয়ার বিভিন্ন শর্ত তুলে ধরা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত নির্দেশনায় বলা হয়,  ব্যাংকে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম সঠিক ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য উপযুক্ত ও পেশাগতভাবে দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হওয়া প্রয়োজন। ব্যাংকের কর্মকাণ্ড প্রধানত আমানতকারীদের অর্থে পরিচালিত হয় এবং এ ক্ষেত্রে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা অপরিহার্য। তাই ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব অপরাপর কোম্পানির চেয়ে  আরও বেশি  গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালে ব্যাংক-কোম্পানি আইনে আরও বেশি সংশোধনী আনা হয়েছে। ওই সংশোধনের ফলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের গঠন এবং পরিচালকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, যোগ্যতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নতুনভাবে নীতিমালার  আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে, ব্যাংক খাতে সুশাসনের নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদের গঠন, পরিচালকের দায়িত্ব ও কর্তব্যসহ এ বিষয়ে নীতিমালা অনুসরণের জন্য নির্দেশনা জারি করা হলো।

নির্দেশনা বলা হয়, ব্যাংক–কোম্পানির পরিচালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে পরিপত্রে বলা হয়েছে, যিনি পরিচালক হবেন ওই ব্যক্তি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হতে পারবেন না;  কোনো জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা জড়িত নন, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তার সম্পর্কে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকতে পারবে না; আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিধিমালা, প্রবিধান, নীতিমালা বা নিয়মাচার লঙ্ঘনের কারণে দণ্ডিত হওয়া যাবে না।

বলা হয়, ব্যাংক–কোম্পানির পরিচালক হতে আগ্রহী ব্যক্তি এমন কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, যার নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বা প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত হয়েছে; তার নিজের কিংবা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের জন্য খেলাপিও নন।

এখন থেকে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে চাইলে তার বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী কেউ কোনোভাবেই আর ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।

ব্যাংকের পরিচালক হতে হলে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা বা পেশাগত অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে।

পরিচালকের যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি কোনো সময়ে আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হননি; তিনি ব্যক্তিগতভাবে অথবা তার ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য কর খেলাপি হতে পারবেন না। স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে এসব শর্ত ছাড়াও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালা পরিপালিত হবে।

নতুন এ নীতিমালার আলোকে পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ২০ জন এবং স্বতন্ত্র পরিচালক হবে তিনজন। তবে ২০ এর নিচে পরিচালক হলে স্বতন্ত্র পরিচালক দুইজনের বেশি হতে পারবেন না।

একই সঙ্গে কোনো একক পরিবার থেকে তিনজনের বেশি সদস্য ব্যাংকের পরিচালক পদে বসতে পারবেন না। ব্যাংকে সুশাসন নিশ্চিত করতে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।