ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সবজির বাজার লাগামহীন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৪
সবজির বাজার লাগামহীন

ঢাকা: রাজধানীর সবজির বাজার লাগাম ছাড়া। ঘটেছে স্মরণকালের মূল্যবৃদ্ধি।

বেগুনের দাম ছুঁয়েছে ব্রয়লার মুরগিকে। পেঁপে ছাড়া কোনো সবজি ৮০ টাকার নিচে নেই। ঢাকার বাজারে চোখে পড়েনি বড় ইলিশ।

রোববার (৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মিরপুর-২, ১০, ১৩, ১১ ও ১৪ নম্বর সেক্টর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।  

রাজধানীর বাজারে প্রতিকেজি বড় বেগুনের দাম ১৮০ থেকে ২১০ টাকা পর্যন্ত। মাঝারি বেগুন ১২০ টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি বাজার ভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ১২০ টাকা। সবুজ ছোট মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা কেজি, বড় পাকা মিষ্টি কুমড়া ৭০ টাকা কেজি। বড় শসা ১২০ টাকা, ছোট শসা ৮০ টাকা; সবই হাইব্রিড। বরবটি ১৪০ থেকে বাজার ভেদে ১৬০ টাকা, করলা বাজার ভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা,  উস্তা ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা,  কাকরোল ১০০ টাকা, কচুর লতি ১২০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকা ও পটলের কেজি ৮০ টাকা। অফ সিজনের সবজি সিমের কেজি ৩২০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের পাতাকপি ও ফুলকপি যথাক্রমে ৭০ টাকা, কচুরমুখির কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ এক কেজির দাম বাজার ভেদে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা। আর চিচিঙ্গার কেজি ১০০ টাকা। দেড় কেজি ওজনের লাউয়ের দাম ৭০ টাকা, বড় হলে দামও বেশি। আলুর কেজি বাজার ভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৫০ টাকা। সব বাজারে পেঁপেরই একটু কম দাম, তাও কেজি ৪০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, আড়তে সব সবজির সরবারহ কম।

বাজারে গিয়ে হিসাব মিলছে না বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত আমিরুল ইসলামের। তিনি মিরপুর-১৩ নম্বরের বাজারে গেছেন সবজি কিনতে। দাম শুনে কী কিনবেন তা হিসাব মেলাচ্ছেন।

শাকও নেই পিছিয়ে, মিলেছে দাম বাড়ার দৌড়ে। কচু শাকের আঁটি ২০ টাকা, লাউর ডগা ৪০ টাকা, পুঁই শাকের আঁটি ৪০ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পদ্মাফুল আঁটি ২০ টাকা ও লাল শাকের আঁটি ৩০ টাকা। এ প্রতিবেদক কথা বলতে চাইলে আমিরুল কথা বলা থেকে বিরত থাকেন। দ্বিতীয়বার বলেন, কী বলবেন বলেন তো?

সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। এখন মাছ-মুরগির দামকে ছুঁয়েছে সবজি। কী কিনবো, আর কী কিনবো না, ভাবছি। একশ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। মিষ্টি কুমড়াও এখন ৮০ টাকা। এ যে দাম বেড়েছে আমি কিনতে পারছি না। কিন্তু কেন বেড়েছে কাউকে প্রশ্ন করতে পারবো না। জিজ্ঞেস করলেই হাজারো কথা বলবে। কিন্তু সন্তান-পরিবারের কাছে কোনো কৈফিয়ত চলবে না, ব্যাগ বোঝাই করে নিয়ে যেতেই হবে। বরং মাছের দামটা একটু কম আছে।

দাম বাড়া নিয়ে কথা বলতে দেখে পাশের আরও একজন এগিয়ে এলেন। নাম রইসুদ্দিন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বলেন, দেশে এখন যা ইচ্ছে তাই চলছে। তিনি ব্যাখ্যা করলেন, দেখেন না যে যা ইচ্ছা করছে। গরিব মানুষের এখন যত সমস্যা। আয় দিয়ে আর শাক-সবজিও কেনা যাচ্ছে না। কিন্তু টাকা আসবে কোথায় থেকে। পেঁয়াজ ১১০ থেকে ধরন ভেদে ১১৫ টাকা। ছোট দেশি পেঁয়াজ চোখে পড়েনি।  

বেগুন যখন ২০০ টাকার ঘর অতিক্রম করেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম ২১০ টাকাতে স্থিত রয়েছে। সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা আর লেয়ার ৩০০ টাকা। তবে কোনো কোনো বাজারে একটু বেড়েছে।  

চিংড়ির কেজি ৮০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, বাঁশপাতা ৮০০ টাকা, গুড়া মাছ ৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, বড় শোল মাছ ৯০০, টেংরা ৮০০ টাকা, টাকি ৫০০ টাকা, পোয়া ৪০০ টাকা, মলা ৪০০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের রুই ৩০০ টাকা, ছোট রুই ২০০ থেকে টাকা, একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতলা মাছ। তবে বড় কাতলা ৪০০ টাকার ওপরে। মৃগেল ৩০০ টাকা, রুপচাঁদা ১০০০ টাকা, বড় বোয়াল ৬৫০ টাকা।

রাজধানী ঢাকার আটটি বাজার ঘুরে মাত্র একটিতে মিলেছে মাছের রাজা এক কেজি বা বেশি ওজনের ইলিশ। দাম ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার ওপরে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম বাজার ভেদে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ছোট ইলিশ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। পাঙাস ২০০ টাকা। গরুর মাংস ৭০০ টাক। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৪
জেডএ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।