ঢাকা, বুধবার, ১২ চৈত্র ১৪৩১, ২৬ মার্চ ২০২৫, ২৫ রমজান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জমেছে ঈদের কেনাকাটা, শপিংমল-মার্কেটে মানুষের উপচেপড়া ভিড়

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৫
জমেছে ঈদের কেনাকাটা, শপিংমল-মার্কেটে মানুষের উপচেপড়া ভিড় ফুটপাতের ঈদের বাজারও জমে গেছে।

সিলেট: দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। তাই ঈদের খুশিকে আরও বর্ণিল করতে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে চলছে কেনাকাটার ধুম।

 মাহে রমজানের মাঝামাঝি সময় থেকে কেনাকাটা শুরু হলেও মার্কেট, শপিংমল, বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতা সমাগম ছিল কম। তবে ২০তম রোজা পেরোতেই কেনাকাটার ধুম পড়েছে সিলেটের সর্বত্র। প্রতিদিন সড়কগুলোতে যানজট এবং মার্কেট-বিপণিবিতানে জনজট লেগেই থাকছে।

দেরিতে মার্কেট জমে ওঠার কারণ হিসেবে অনেকে জানিয়েছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের মানুষজন বাইরে থেকে টাকা আসার অপেক্ষায় থাকেন। এবার মাসের শেষের দিকে রেমিট্যান্সের টাকার অপেক্ষা থাকেন। যে কারণে শেষ সময়ে এসে জমে ওঠে ঈদ বাজার। আর দোকানিরাও শেষের দিকে ক্রেতা সমাগম ঘটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ঈদ বাজার জমজমাট হওয়াতে সড়কে বেড়েছে যানজট। তাই সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।

সোমবার (২৪ মার্চ) নগরের শপিংমলগুলোতে ঈদের কেনাকাটা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। শপিংমলগুলো থেকে শুরু করে সড়কের পাশে ফুটপাতজুড়ে বসা কাপড়ের দোকানেও ভিড় ছিল লক্ষণীয়। নগরের জিন্দাবাজার, চৌহাট্রা, কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, লালদিঘীর পাড়, হকার মার্কেট, মহাজন পট্রিসহ বিভিন্ন এলাকায় মার্কেটে কেনাকাটা করতে মার্কেটগুলোতে যেন জনস্রোত লেগে আছে। সেই সঙ্গে প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে যানজট ছিল চোখে পড়ার মতো।  সরেজমিনে দেখা গেছে, উচ্চ-বিত্ত, উচ্চ-মধ্যবিত্তরা নগরের কুমারপাড়া ও নয়াসড়ক এলাকার ব্র্যান্ড-শপগুলোতে কেনাকাটা করছেন। মধ্যবিত্তরা রয়েছেন জিন্দাবাজার কেন্দ্রিক ব্লু ওয়ার্টার, আল হামরা, মিলেনিয়াম শপিং সিটি, সিটি সেন্টারসহ বেশ কয়েকটি শপিংমলে কেনাকাটা করছেন। মধ্যবিত্তদের অনেকে ও নিম্নমধ্যবিত্তরা আবার বন্দরবাজার বধুবন ও হাসান মার্কেট বেছে নিচ্ছেন। এ ছাড়া নিম্ন-মধ্যবিত্তরা ঘুরে কেনাকাটার জন্য হকার্স মার্কেট, মহাজনপট্টি, ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটা সারতে দেখা গেছে।

বিশেষ করে ইফতারের পর থেকেই রাত ২টা পর্যন্ত সরগরম থাকছে সিলেটের ঈদ বাজার। যে যার সাধ্য অনুযায়ী করছেন কেনাকাটা। তবে গত বছরের তুলনায় এবার কাপড়ের নাম আরও বাড়তি রাখা হচ্ছে, অভিযোগ ক্রেতাদের।

ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ বাজারে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় সব পোশাক এসেছে। বাজারে দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আধুনিক ডিজাইনের সব ধরনের পোশাক রয়েছে। পাঞ্জাবি, শার্ট, গেঞ্জি, ফতোয়া, থ্রি—পিস, টুপিস ও শিশুদের জন্য সব ধরনের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। পুরুষ ক্রেতাদের তুলনায় নারী ক্রেতাই বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার সব পোশাকের দাম একটু বেশি বলে দাবি ক্রেতাদের।

নয়াসড়কে ঈদবাজার করতে আসা শাহিদুর রহমান নামের এক ব্যাংকের বলেন, ঈদের এখনো সপ্তাহ দিন বাকি, এ অবস্থায় বাজারে মানুষের ঢল দেখা যাচ্ছে। পরিবারের জন্য কিছু কিনতে চেষ্টা করছি। দেখা যাক কিনতে পারি কি না।

সিলেট সদর উপজেলা থেকে জিন্দাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা আখতার হোসেন বলেন, মার্কেটে কেনাকাটা করার সাধ্য নেই। তাই পরিবার পরিজনের জন্য সস্তায় কেনাকাটা করতে চেষ্টা করছি।

আলহামরা মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা মীরের ময়দানের রাবেয়া আক্তার বলেন, আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছি। মার্কেটে কাপড়ের দাম বেশি।  পছন্দের জিনিস কিনতে চেষ্টা করছি।

জিন্দাবাজার শ্যামলী মার্কেটের কয়েকজন দোকানি বলেন, রোজার শেষের দিকে এসে কেনাকাটা ভালোই হচ্ছে। এ ক’দিনে আশা করি, আরও ভালো হবে।

হাসান মার্কেটের দোকানদার রায়হান উদ্দিন বলেন, এবার ঈদে ক্রেতাদের উপস্থিত একটু বেশি মনে হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে সব নতুন কালেকশন দোকানে এনেছি। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। ভালো বিক্রির কথা জানিয়েছেন শ্যামলী মার্কেটের কসমেটিক্সে ও জুতার দোকানিরাও। বেচাকেনা গত বছরের তুলনায় এবার ভালো হচ্ছে। সময় যত যাচ্ছে, ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ছে বলেন তিনি।

নয়াসড়ক দুলহানের স্বত্বাধিকারী শাহিন আহমদ বলেন, আমার তিনটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নয়াসড়কে দুটি, আরেকটি বেবি শপ জিন্দাবাজারে। এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। তবে কাপড়ের দাম একটু বেশি।

সিলেট মিলিনিয়াম শপিং সিটির কাপড়ের দোকান বিটুবির পরিচালক সাহেদ আহমদ বলেন, দোকানে ক্রেতাদের যে ভিড়, তা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। সবার কথা চিন্তা করে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি, শেষ মুহূর্তে বাজার আরও জমে উঠবে।  

জিন্দাবাজার ব্লু ওয়াটার শপিংমলের কাপড়ের দোকানদার মারুফ আহমেদ বলেন, এবার ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পোশাক উঠিয়েছি। রোজার শুরুতে ক্রেতাদের ভিড় কম ছিল। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৫
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।