ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, আমরা সবাই একমত যে, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা যেন না হারায়, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাথে যেন আমাদের প্রতিযোগিতা না কমে; সেই আশ্বাসই আমরা পেয়েছি সরকারের কাছ থেকে।
রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পর্যালোচনা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে ব্যবসায়ী নেতারা এই স্বস্তির কথা বলেছেন।
বৈঠকে অর্থ, বাণিজ্য, পরিকল্পনা, জ্বালানি উপদেষ্টা, একজন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি, একজন স্পেশাল অ্যাম্বাসেডর, দশজনের মতো সচিব এবং বড় ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে চারজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তপন চৌধুরী বলেন, আমরা আসলে যতটা চিন্তিত ছিলাম, আজকের আলোচনা থেকে সেটার একটা পথনির্দেশনা পেয়েছি। যেটা আমার কাছে মনে হয়, ব্যবসায়ীদের কাছে সুখবর, আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা বিশ্বাস করি। আমাদের সুযোগ সামনে রয়েছে। সব সময় বাংলাদেশ থেকে মনে করা হয়, তৈরি পোশাক একমাত্র পণ্য যেটা আমাদের রপ্তানির ঝুড়িতে রয়েছে। বিষয়টি কিন্তু তা না, অনেক পণ্য রয়েছে যেটা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন না। আমি একটু আগে টুইটে দেখলাম ইতোমধ্যে ভারত থেকে ৩০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের মেডিসিন রপ্তানি হতো। সেগুলোর ট্যারিফ তারা দিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সুতরাং চারিদিক থেকে সুযোগ আসছে। এখন আমাদের যে নীতি নির্ধারক রয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যে সুসম্পর্ক রয়েছে; আমি মনে করি, এসব ব্যক্তির মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, আজকে আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের স্বস্তির জায়গা তৈরি হয়েছে। সরকারের সুনির্দিষ্ট যে একটা পরিকল্পনা আছে, সেটা একটা টাইমবাউন্ড পরিকল্পনা। আমরা বারে বারে বলেছি, এটার একটা সেলফ লাইফ আছে যদি আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না করি। তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। আজকে মনে করছি, সেটা আমরা করতে পারব।
তিনি বলেন, দেশের স্বার্থ আগে, সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থটা মাথায় রেখে সুযোগগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আমরা আজকে খুবই উৎসাহিত হয়েছি। আর একটা বিষয়ে আমরা সবাই একমত যে, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা যেন না হারায়। একই সঙ্গে কোনো রকমের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাথে যেন আমাদের প্রতিযোগিতা না কমে। সেই আশ্বাসই আমরা পেয়েছি সরকারের কাছ থেকে। বেসরকারি খাত থেকে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকলে আমরা পেরেছি এবং পারব। সেই ফিল্ডটা তৈরি করার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। বাকিটা আমাদের, সেখানে একটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগবে।
নারী উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি এবং মোহাম্মাদি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক বলেন, আমি এক লাইনেই শেষ করছি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করবেন, এরকম একটি চিঠি এখান থেকে যাবে সেটার প্রতীক্ষায় থাকলাম।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৫
জিসিজি/এমজেএফ