ঢাকা: চলতি অর্থ বছরে ১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষিঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সৌরচালিত সেচযন্ত্র ক্রয়ে ঋণ প্রদানের বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার প্রতিষ্ঠানের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান এ নীতিমালা ঘোষণা করেন।
এ বছর কৃষিঋণ বিতরণের জন্য কমলা, আগর, স্ট্রবেরি, পান, মধু চাষসহ নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি টিস্যু কালচার, উচ্চমূল্য ফসল ইত্যাদি খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ড. আতিউর রহমান।
গভর্নর বলেন, ‘পাট চাষের ক্ষেত্রে যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাতে প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। প্রণীত নীতিমালাতে পাট চাষের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এখনো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাম অয়েলের চাষ শুরু হয়নি, তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ২৭টি জেলায় পাম চাষ করা সম্ভব। এরই মধ্যে কোনো কোনো এলাকায় পাম চাষ গাছ রোপন করা হয়েছে। ফলে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে কৃষকদের বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাম চাষে আগ্রহী করার জন্য নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘ঋণ বিতরণই নয়, এ খাতে তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখার স্বার্থে ঋণ আদায়েও নতুন নীতিমালায় বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, কৃষি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত নারীদের এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ঋণ প্রদানের বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলার জন্য নীতিমালায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এবারের লক্ষ্যমাত্রা জাতীয় বাজেটের প্রায় ৯.৫ শতাংশ এবং বিগত ২০০৯-১০ অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৯.৬ শতাংশ বেশি।
ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘দেশে ডাল, তৈলবীজ, মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টার প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন যথেষ্ট নয়। তাই এসব পণ্য আমদানিতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করা হচ্ছে। এসব আমদানি নির্ভর ফসল চাষকে উৎসাহ দিতে সরকার ঘোষিত রেয়াতী (২ শতাংশ) হার সুদে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলেও প্রচারের অভাবে এ খাতে যথেষ্ট ঋণ বিতরণ হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর মুর্শিদ কুলী খান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের প্রচারনা বৃদ্ধির ফলে বিগত অর্থ বছরে এ খাতে ১২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। নতুন নীতিমালায় রেয়াতী হার সুদে ঋণ বিতরণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা কৃষি ঋণ কমিটিতে এ বছর থেকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১০