ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

লোকসান থেকে পরিত্রাণ চান ব্যবসায়ীরা

জান্নাতুল ফেরদৌসী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫
লোকসান থেকে পরিত্রাণ চান ব্যবসায়ীরা ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রতিবছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয় ছোট-বড় সব মানের ব্যবসায়ীদের লাভ, প্রচার ও প্রসারের জন্য। মাসব্যাপী এ মেলায় যেন সারা বছরের ব্যবসাকে সমতায় রাখতে পারে।

কিন্তু এবছরের মেলায় লাভের বদলে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

এই ক্ষতিপূরণ থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পাবেন এ প্রশ্নই এখন মেলার বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর মুখে মুখে।

মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) মেলার বিভিন্ন স্টলে ঘুরে এমনই আভাস পাওয়া যায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।

লোকসানের কারণ হিসেবে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করেছেন অনেকেই। মেলার কয়েকজন স্টল ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার দর্শনার্থীর একটু ভিড় থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে ক্রেতা সংখ্যা গতবছরের তুলনায় অনেক কম। অন্য দিনগুলোতে আরো খারাপ অবস্থা।

২৪৫নং স্টলের আক্তার এন্টারপ্রাইজের ইনচার্জ মো. সেলিম বাংলানিউজিকে বলেন, দোকান ভাড়া ও স্টাফদের ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন খরচ হয় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু দিনে ৫০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করতে পারি না। অথচ গতবছরের মেলায় এ সময় প্রায় ১ থেকে দেড় ল‍াখ টাকা বিক্রি হতো।

কিয়াম প্যাভেলিয়ানে থাকা মামুন জানান, শুধু রাজধানীর মানুষ মেলায় আসছে। অবরোধের কারণে সাভার, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ থেকে মানুষজন আসতে পারছে না। অথচ তারাই আমাদের মূল ক্রেতা।

আতিক ট্রেড নামের ১৫৫ নং স্টলের ইনচার্জ লাভলু বলেন, এবারের মেলায় বিনিয়োগের অর্ধেকও উঠে আসবে না। সারাদিনে বিনিয়োগের টাকার পরিমাণ বিক্রি করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। লোকজন আসে দেখে আবার চলে যায়। আমাদের অবস্থা এখন ‘ছাইরা দেমা কাইন্দা বাঁচি’র মতো।

হাজির বিরিয়ানির বিশাল প্যাভেলিয়নের হেলাল উদ্দিন বেপারী বলেন, আমার দোকানে বাজার, ভাড়াসহ প্রতিদিন খরচ হয় প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু দৈনিক বিরিয়ানি বিক্রি হয় মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। গত শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সব হিসাব করলে এবার আমাদের মাথায় হাত পড়েছে।

দেশের সার্বিক পরিস্থিত যাতে ভালো হয় সেজন্য দু’পক্ষকে (সরকার ও বিরোধীদল) সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মেলার ১০ দিন বাকি। যদি এখনো দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ঠিক হয় তাহলে অন্তত লসের হাত থেকে বাঁচতে পারি।

সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে এ্যালুমিনিয়াম ফার্নিচার স্টলের ইনচার্জ মাহবুব জানান, মেলায় সরকারের তো কোনো ক্ষতি নেই। সরকার ঠিকই জায়গার ভাড়া নিচ্ছে।   ট্যাক্সও দিচ্ছি। যা ক্ষতি সব আমাদের। কিন্তু আমরা কি দোষ করেছি। কবে যে এ অস্থিরতা ঠিক হবে তাও জানি না।   

হরতাল অবরোধের কারণে শুধু মেলার নয় দেশের আমদানি-রফতানি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ খাত, বীমা, মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ও সেবাখাতসহ সবকিছুর প্রবৃদ্ধি নিচের দিকে নামছে।   এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশের এ ক্ষাতগুলো বড় অংকের ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলেও মন্তব্য করেছেন মেলার বিনিয়োগকারীরা।   সেই সঙ্গে আদৌ দেশের অবস্থা স্থিতিশীল হবে কিনা এমন আশঙ্কাতেও ভুগছেন তারা।

মেলার সার্বিক পরিস্থিতি এবং ব্যবসায়ীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বাংলানিউজকে বলেন, সরকার এবং বিরোধীদল কোনো দলই জনগণের কথা ভাবেনা। তারা শুধু ক্ষমতা নিয়ে ব্যস্ত। দেশের মানুষের শান্তির জন্য আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।