ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বালুজুড়ি মরিচ চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

টিটু দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৩ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
বালুজুড়ি মরিচ চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জে দেশি মরিচকে স্থানীয়ভাবে বালুজুড়ি মরিচ বলে। এ মরিচ চাষ করে বেজায় খুশি অনিল সরকার।

এ বালুজুড়ি চাষ করে তার সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে।

শুধু অনিল সরকার নয়, এ জাতের মরিচ চাষ করছেন কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার কলাম ইউনিয়নের কাকুরিয়া গ্রামের ১৬টি পরিবার।

মরিচ খেত থেকে মরিচ তুলে এনে রোদে শুকিয়ে বস্তাবন্দি করে রাখছেন মরিচ চাষিরা। কিছু মরিচ পরিবারের প্রতিদিনের রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য রেখে বাকি মরিচ ভালো দামে বিভিন্ন বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন তারা। এতে মরিচ চাষি পরিবারগুলো স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন।
  
সরেজমিন দেখা যায়, এ গ্রামে প্রায় দুই বছর আগে প্রথম দেশি মরিচ চাষ করেন অনিল সরকার নামে এক কৃষক। সেবছর অনিল সরকার প্রায় ২৫ শতাংশ জায়গায় দেশি মরিচের চাষ করে আট মণ শুকানো লাল মরিচ পান। ওই আট মণ মরিচ বিক্রি করে পেয়েছিলেন প্রায় ৪২ হাজার টাকা।

অনিল সরকারের মরিচ চাষে লাভের কথা এলাকায় প্রচার হওয়ায় আস্তে আস্তে অন্য পরিবারগুলো মরিচ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এর পর থেকে এই গ্রামে মরিচ চাষ করছেন পল্টু দাস, নারায়ণ চন্দ্র দাস, সুজন সরকার, বিকাশ দাস, বসু দাস, পরিমল দাস, জয়হরি সরকার, শ্রীচরণ দাস, হরিলাল দাস, হীরা লাল সরকার, সন্তোষ দাস, মন্টু দাস, হর মোহন সরকার, সুভাষ দাস, মনিন্দ্র দাস।

মরিচ চাষি অনিল সরকার বাংলানিউজকে বলেন, মরিচ চাষে খরচ এবং কায়িক পরিশ্রম দু’টোই কম। এ গ্রামে আমি প্রথম দেশি (বালুজুড়ি) মরিচ চাষ করি। এ বছর ৭৫ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষ করে ৩০ মণ শুকানো মরিচ ঘরে তুলেছি।

এ গ্রামের আরেক মরিচ চাষি নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, আমি এ বছরই প্রথম ২৫০ শতাংশ (আড়াই একর) জমিতে দেশি মরিচ (বালুজুড়ি) চাষ করেছি। আশা করছি ১শ’ মণ শুকানো মরিচ তুলতে পারব। যার দাম হবে ছয় লাখ টাকার মতো।
 
মরিচ চাষি পল্টু দাস বলেন, ১৫০ শতাংশ (দেড় একর) জমিতে আমি ৬০ মণ মরিচ পাব বলে আশা করছি। বাজারে বিক্রি করতে পারব তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। ধানের চেয়ে মরিচ চাষ করে আমরা অনেক বেশি লাভবান হইছি (হয়েছি)।
 
তিনি আরো বলেন, আমরা যারা মরিচ চাষি তারা সরকারি সহায়তা বা কৃষি ঋণ পেলে আরো ভালভাবে বেশি মরিচ চাষ করতে পারব।
 
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা ছাড়াও কটিয়াদী, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর, করিমগঞ্জ, তাড়াইল ও নিকলী উপজেলায় দেশি মরিচের (বালুজুড়ি) চাষ হয়ে থাকে। রান্নায় অন্যান্য শুকানো মরিচের তুলনায় এ মরিচ লাগে কম এবং তরকারির স্বাদও হয় ভাল। দেড় ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি লম্বা লাল টুকটুকে বালুজুড়ি মরিচের কদর গৃহিণীদের কাছে অনেক বেশি।
 
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ অমিতাভ দাস বাংলানিউজকে জানান, কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় আগে তেমন মরিচ চাষ না হলেও এখন স্থানীয়ভাবে দেশি মরিচের চাষ করছে অনেক পরিবার। এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা কৃষি বিভাগকে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
আরএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।