ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংকগুলোতে অভিযোগকেন্দ্র খোলার নির্দেশ গভর্নরের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৬ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৫
ব্যাংকগুলোতে অভিযোগকেন্দ্র খোলার নির্দেশ গভর্নরের

সিলেট: চেক জমা দেওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে টাকা না দিলে গ্রাহকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অভিযোগ করতে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এজন্য ব্যাংকগুলোর প্রতিটি শাখায় অভিযোগকেন্দ্র খোলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।



শুক্রবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় সিলেট চেম্বার বিল্ডিংয়ে সিলেট চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো অনিয়ম করলে সুনির্দিষ্টভাবে ১৬২৩৬ অভিযোগ নাম্বারে ফোন করে জানিয়ে দেবেন।

এ সময় পাবলিক ব্যাংকগুলোকে স্মার্ট ব্যাংক হতে পরামর্শ দেন তিনি। এজন্য ব্যাংকগুলোকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময় দেওয় হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রত্যেক ব্যাংককে টুল ব্যাংকিংয়ে আসতে হবে। পিছিয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, লভ্যাংশ বাজারভিত্তিক। এখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছুই করার নেই। এরপরও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কোনো ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হলে, ব্যাংক চাইলে ওই ব্যবসায়ীকে সহযোগিতা করতে পারে। এক্ষেত্রে গ্রাহক ও ব্যাংকের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করতে পারেন ভুক্তভোগী গ্রাহক।  

এ সময় ব্যাংকিং খাতে সিলেটের ব্যবসায়ীদের সমস্যার দ্রুত সমাধান ও ব্যাংকগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করার জন্য উদ্যোগী হতে বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর।

ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, এখন আগের সময় নেই যে, গ্রাহকরা এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবেন, সকালে চেক দিলে বিকেলে টাকা দেবেন। এখন চেক দেওয়া মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে গ্রাহককে টাকা প্রদান করতে হবে।

ব্যাংকগুলোতে সুদের হার কমানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রতিটি ব্যাংক তার বোর্ডে লভ্যাংশের পার্সেন্টিজ নির্ধারণ করে থাকে। এক্ষেত্রে যে ব্যাংক বেশি লভ্যাংশ চায়, তার কাছে ব্যবসায়ীদের না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তখন প্রতিযোগিতার টিকে থাকতে হলে ব্যাংকগুলোকে অটোমেটিক ঋণ দিতে বাধ্য হবে।

একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে তামাবিল শুল্ক স্টেশনে ব্যাংকের শাখা স্থাপনে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গরীবদের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে আতিউর বলেন, নেপালে দুর্গতদের জন্য পরবর্তী সহায়তায় ব্যাংকগুলোর ২৭ হাজার কম্বল পাঠানো হয়েছে।

প্রবাসীদের পাঠানো টাকা উত্তোলনে একদিনও সময় লাগবে না জানিয়ে তিনি বলেন, দুই মাসের মধ্যে রিয়েল টাইম গ্রোথ সেটেলমেন্ট চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে আরও আধুনিক ও বাস্তবসম্মত হতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম ব্যবসায়ীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, প্রত্যেক ব্যাংকের ছেঁড়া টাকা নিতে হবে। না নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিলেটে পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য বিদেশি পর্যটকদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রানীতি সহজীকরণের ব্যবসায়ীদের দাবি খতিয়ে দেখবে বলেও জানান তিনি।

সিলেট চেম্বারের সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসের মহাব্যবস্থাপক মোবারক হোসেন, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ হালিম চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মামুন কিবরিয়া সুমন, লায়েছ আহমদ, সাবেক চেম্বার সভাপতি এমএ মোমিন, ইউমেনস চেম্বার সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, চেম্বার পরিচালক নুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সেঞ্জের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফখরুদ্দিন আলী আহমদ, চেম্বার কনভেনার জিয়াউল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৫
এনইউ/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।