ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এনসিসি পরিচালকদের দ্বন্দ্বের নেপথ্যে এমডি হাফিজ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
এনসিসি পরিচালকদের দ্বন্দ্বের নেপথ্যে এমডি হাফিজ! গোলাম হাফিজ আহমেদ

ঢাকা: ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি) ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করেছেন খোদ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম হাফিজ আহমেদ।
 
নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে যেসব পরিচালকদের বাধা হিসেবে দেখছেন তাদের ব্যাংক থেকেই সরিয়ে দিতে তিনি নিচ্ছেন দ্বন্দ্ব লাগানোর কৌশল, ব্যবহার করছেন পরিচালনা পর্ষদে থাকা নিজের আস্থাভাজনদের।



এ কৌশলেরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পরিচালনা পর্ষদের ৩১৫তম সভায় নোটিশ ছাড়াই তিন পরিচালককে অপসারণ করা হয়।   এমডি হাফিজের চক্ষুশূল হয়ে অপসারিত পরিচালকরা হলেন— মোহাম্মদ মইনুদ্দিন, খায়রুল আলম চাকলাদার ও হারুনুর রশীদ।
 
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী, সভাটির আগে অন্য পরিচালকদের নোটিশ ও এজেন্ডা পাঠানো হলেও পাঠানো হয়নি তিন পরিচালকের কাছে। আর সেই সভায়ই তিন পরিচালকের অপসারণ ও পরিচালনা বিধির ৯১ ধারা সংশোধনের প্রস্তাব পাস হয়।
 
ওই সভায় অন্যতম পরিচালক আব্দুস সালামসহ কয়েকজন এই অপসারণ ও প্রস্তাব পাসের বিরোধিতা করলেও কোনো লাভ হয়নি। আব্দুস সালাম বিরোধিতার বিষয়টি পর্ষদ সভার কার্যপত্রে রাখার আবেদন করলেও তা-ও রাখা হয়নি।

এ ঘটনার পর এনসিসি ব্যাংকের একাধিক পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এসব ঘটনার জন্য এমডি গোলাম হাফিজ আহমেদকেই দায়ী করেন।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরিচালক বাংলানিউজকে বলেন, ঠিক এক বছর আগে ডিএমডি থেকে পদোন্নতি পেয়ে এমডি হন গোলাম হাফিজ আহমেদ। চতুর হাফিজের এ অস্বাভাবিক পদোন্নতি কয়েকজন পরিচালক ভালোভাবে মেনে নেননি।
 
এ কারণে গোলাম হাফিজ এমডি হিসেবে তাদের অনেকটাই এড়িয়ে চলতেন। পর্ষদ সভায় নিজের  আস্থাভাজনদের দিয়ে তাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোণঠাসাও করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
 
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি বড় ঋণ অনুমোদন করতে গোলাম হাফিজ তার অনুসারীদের দিয়ে পর্ষদে হস্তক্ষেপ করেন। এ সময় কয়েকজন পরিচালক তাতে বাধা দেন। আলোচনা করেন ব্যাংকের লাভ-লোকসান ও খরচ নিয়ে।
 
তখন দু’একজন পরিচালক এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, এমডির কারণে কয়েকটি বড় অংকের ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না। বারবার পুনঃতফশিল করতে হচ্ছে।
 
কয়েকজন পরিচালক জানান, ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা ভালো নয়।   বর্তমান এমডি আর কিছুদিন থাকলে ধ্বংস হয়ে যাবে এনসিসি ব্যাংক। এজন্য আমরা বারবার এমডিকে অপসারণের  কথা বললেও কয়েকজন পরিচালক তাতে বাধা দিচ্ছেন।
 
উপরন্তু ৬ এপ্রিলের পর্ষদ সভায় তিন পরিচালকে অপসারণ করা হয়েছে। অপসারণ কার্যকর করতেই ব্যাংক পরিচালনা বিধির ৯১ ধারার ৩ উপধারা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
 
ওই পরিচালকরা জানান, ব্যয় কমাতে প্রায় দেড়শ’ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চাকরিচ্যুত হওয়ার আগেই ব্যাংক ছেড়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদমর্যাদার ২৬ জন কর্মকর্তা। অনেককেই চাকরি খোঁজার জন্য মৌখিকভাবে বলাও হয়েছে।
 
এ বিষয়ে জানতে গোলাম হাফিজের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। অফিসের টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তার পিএস তারিকুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, স্যার একটি জরুরি মিটিংয়ে আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
এসই/এসএন/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।