ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জ্বালানি-কৃষিতে ভর্তুকি

আসছে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৮ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৫
আসছে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট

ঢাকা: মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।
 
বরাবরের মতো এবারও কৃষি ও জ্বালানি খাতে বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকছে।

৪ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত এই বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যা পাস হবে ৩০ জুন।

এবার বাজেটে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট রাখা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আহরণ করবে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

বাজেটে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ এরমধ্যে রাখা হবে।
 
বাজেট ও ভর্তুকি প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘ভর্তুকি একটি চলমান প্রক্রিয়া। গত বছরের মতো এবারও জ্বালানি তেলে ভর্তুকি দেওয়া হবে। ’
 
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমছে তবুও কেন ভর্তুকি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) লসে আছে। লসের ক্ষত থেকে তারা যাতে একটু মুক্তি পেতে পারে সেজন্যই তেলে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। ’
 
‘এবারও কৃষিতে ভর্তুকি থাকছে। অামরা বিভিন্ন সময় নৈতিক দিক  বিবেচনা করে ভর্তুকি দিয়ে থাকি। লাভ-লোকসানের কথা চিন্তা করি না। যেমন বয়স্ক ভাতা, এটা সরকারের জন্য অতিরিক্ত খরচ তবে নৈতিকতা চিন্তা করে তা দেওয়া হয়,’ যোগ করেন এমএ মান্নান।
 
এদিকে আগামী বাজেটের আকার তিন লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি হতে পারে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিছুটা পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

একই সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্যানিটেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামো খাতকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবেও বলে জানান তিনি।  
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার উন্নয়ন বাজেট অথবা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ৯৭ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে । এরমধ্যে সরকারি ব্যয় (জিওভি) সাড়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা। আর প্রকল্প সাহায্য থেকে সাড়ে ৩৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।

তবে স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব তহবিল ৩ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা দিয়ে মোট এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৯৯৬ কোটি টাকা।
 
পদ্মাসেতু’তে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রেখে আগামী অর্থ বছরের (২০১৫-১৬) জন্য এডিপি ঘোষণা করা হয়।

নতুন এডিপিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পদ্মাসেতুর গুরুত্ব বিবেচনায় পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাচ্ছে বিদ্যুৎ খাত। এ খাতে ১৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে নতুন করে বিদ্যুৎ বিভাগ আরও হাজার কোটি টাকা দাবি করছে বলে জানায় সূত্র।

ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে দেওয়া হচ্ছে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। এর আকার হচ্ছে ১০ হাজার ৪৫৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
‍শিক্ষার প্রসার ও গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ১০ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে বরাদ্দ পাবে ৮ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা।

অন্যদিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৩২৫ কোটি ৫৩ লাখ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৩৮ কোটি ৬৬ লাখ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১১৬ কোটি, আইন ও বিচার বিভাগে ৩২৯ কোটি ৩ লাখ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ২২০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এডিপি’তে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

২০১৪-১৫ অর্থ বছরের ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার  বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। বাজেট থেকে কমানো হয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা, সংশোধিত জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩১ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৫
এমআইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।