ঢাকা: অহনা, মীনা ও খুশবু। রাজধানীর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী।
তাদের বক্তব্য, ব্যাগে নগদ অর্থ রাখার চেয়ে বিকাশ অ্যাকাউন্ট দিয়ে অর্থ পরিশোধ অধিক নিরাপদ ও সুবিধাজনক।
রাজধানীর ফকিরাপুলের ব্যবসায়ী জরিম শেখ। ব্যবসায়িক কাজে যেখানেই যান ব্যবহার করেন তমা ট্যাক্সিক্যাব। ফোন দিলেই সময় মতো পাওয়া যায় বলে তিনি এর প্রতি আস্থাশীল। যতবারই এ ট্যাক্সিক্যাবে করে ভ্রমণ করেন না কেন এর বেশিরভাগ সময়ই ভাড়া দেন হাতের মোবাইল ফোনটি দিয়ে বিকাশ’র মাধ্যমে।
নগদ অর্থের বাইরেও এখন বাড়ছে কেনাকাটা বা মূল্য পরিশোধ। কেবল ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড দিয়েই নয়, যে কোনো পণ্য-দ্রব্য কেনাকাটায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিস্তৃত পরিধি সময়ের সঙ্গে দিন দিন জনপ্রিয়তাও লাভ করছে বেশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিভিন্ন ধরনের সেবার ব্যবহারই মানুষকে এর প্রতি উৎসাহী করে তুলছে।
‘বর্তমানে মোবাইল ফোন দিয়েই হয় কেনাকাটা। বাড়তি কোনো ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয় না। আর আধুনিক এ সেবায় নিরাপত্তাও প্রচুর। অবলীলায় কথাগুলো বলে যাচ্ছিলেন রাজধানীর শেওড়াপাড়া, শামীম স্মরণির স্বপ্ন আউটলেটের বিক্রয়কর্মী মো. বশির। দীর্ঘ সময় চাকরির সুবাদে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তার এ প্রকাশ।
তিনি বলেন, নগদ অর্থ দিয়ে তো কেনাকাটা হয়ই, তবে আজ-কাল বিকাশ ব্যবহার করে পণ্য কেনার প্রবণতাও বাড়ছে।
বিকাশ দিয়ে এখন শুধু টাকা পাঠানো কিংবা গ্রহণই নয়, মোবাইল ফোনের ব্যালেন্স রিচার্জ, কেনাকাটার মূল্য পরিশোধ, জমানো টাকার ওপর ইন্টারেস্ট, কর্মীদের বেতন দেওয়াসহ এমন অনেক কিছুতেই বাড়ছে এ মাধ্যমটির সেবার পরিধি।
এর সঙ্গে জড়িতরা আশা করছেন যে হারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক কাজ করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে এতে আসন্ন রোজা ও ঈদকে ঘিরে মানুষের এ লেনদেন আরও বাড়বে। প্রয়োজনের তাগিদেই বাড়বে। এতে যোগ হবে নিজস্ব নিরাপত্তার দিকটিও।
একজন বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী এখন ঘরে বসেই গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং এয়ারটেল নম্বরে রিচার্জ করতে পারছেন। সেই সঙ্গে বিকাশ দিয়ে কেনাকাটার মূল্য পরিশোধ তো হচ্ছেই। বড় বড় সুপারশপ যেমন- আড়ং, আগোরা, স্বপ্ন, ইয়েলো, মীনাবাজারের আউটলেটগুলতে বিকাশ’র মাধ্যমে মূল পরিশোধ সম্ভব। এছাড়াও বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, এমনকি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোকানেও বিকাশ’র মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করা যাচ্ছে।
এছাড়া স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসা বিল, তমা ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের প্লেনের টিকেট, ইন্টারনেটের বিল দিতে পারেন যে কেউ বিকাশ ব্যবহার করে। সব মিলয়ে দেশব্যাপী বিকাশের মাধ্যমে বর্তমানে ৫ হাজারেরও বেশি দোকান ও প্রতিষ্ঠানে মূল্য পরিশোধ সম্ভব।
ধানমন্ডির ‘মীনাবাজার’ থেকে পণ্য কিনেছেন শফিক মোহাম্মদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অতি সহজে বিকাশ দিয়ে মীনাবাজারসহ বিভিন্ন বড় বড় সুপারশপ থেকে পণ্য কিনতে পারছি। মোবাইল ব্যাংক ব্যবহারে ঘরের বাজারও যে এমন হাতের মুঠোয় চলে আসবে এমনটা কখনও ভাবিনি।
তিনি আরও বলেন, সামনে রোজা ও ঈদ। এতে কেনাকাটায় বার্তি নিরাপত্তা দেবে আমার মোবাইল ব্যাংকিং। নগদ টাকা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় না থেকে এ সেবার আওতায় আসে যে কেউ হতে পারেন চিন্তামুক্ত। আর এ জন্য তাকে তো কোনো অতিরিক্ত চার্জ দিতে হচ্ছে না, তাই কোনো সমস্যাও নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন দেশে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৩শ’ ৫০ কোটি টাকারও বেশি। যা আগামী দিনগুলোতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা। আর তাই তো নিরাপদ ও সহজ লেনদেনের জন্য এখন নগদ অর্থে কেনাকাটা নয়; হবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৭ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৫
আইএ/এএ