ঢাকা, শনিবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শাহজালালে এক মাসে শত কোটি টাকার পণ্য জব্দ

ইমরান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৫
শাহজালালে এক মাসে শত কোটি টাকার পণ্য জব্দ (ফাইল ফটো)

ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাস রোধে তৎপরতা বাড়িয়েছে কাস্টম প্রিভেনটিভ দল। গত এক মাসে প্রায় ১০০ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া পণ্য জব্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইলও রয়েছে।

শনিবার (৩০ মে) ২০ কোটি টাকার ৭ হাজার মোবাইল ফোন জব্দ করে প্রিভনটিভ দল। চোরাকারবারীর একটি চক্র মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য খালাসের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে কাস্টম প্রিভেনটিভের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা চক্রটিকে চিহ্নিত করার জন্য বিভিন্ন অভিযান শুরু করেছে।

কাস্টম কর্তৃপক্ষের প্রিভেনটিভ সূত্র জানায়, আসন্ন রমজানকে ঘিরে একটি চক্র ফেব্রিক্সের ঘোষণা দিয়ে উন্নতমানের শাড়ি কাপড়,  মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসছে।

চক্রটি তাদের চালানে ফেব্রিক্স দেখালেও সরেজিমনে গিয়ে দেখা যায়, সেগুলো শাড়ি কাপড়। মূলত শুল্ক কমাতে এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে তারা। গত এক মাসে এ ধরনের প্রায় ৮/১০ টি চালান ধরা পড়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ শাড়ি কাপড়। যার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকার উপরে।

সূত্র জানায়, মোবাইল ফোনের চার্জার ঘোষণা দিয়ে আনা হয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মোবাইল। গত বৃহস্পতিবার ও শনিবার প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের স্যামসং, সনি এক্সপেরিয়া ব্রান্ডের প্রায় ২২ হাজার মোবাইল জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মে) ১৫ হাজার মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। আর শনিবার (৩০ মে) জব্দ করা হয় ২০ কোটি টাকার ৭ হাজার মোবাইল ফোন।

এসব পণ্য ছাড়াও ওষুধের কাঁচামালের ক্ষেত্রেও শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে চক্রটি। গত এক সপ্তাহে আর্জেন্টিনা ও তুরস্ক থেকে আনা ২৩ কোটি টাকা মূল্যের ওষুধের কাঁচামাল জব্দ করা হয়।

কাস্টম কর্তৃপক্ষের প্রিভেনটিভ ইউনিটের সহকারী কমিশনার শাহিদুজ্জামান সরকার বাংলানিউজকে বলেন, গত কিছুদিন ধরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য খালাসের চেষ্টা করছে একটি চক্র। আমরা আমাদের তৎপরতা বৃদ্ধির কারণে সেগুলো জব্দ করতে পাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা দলের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আমরা চক্রটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। চিহ্নিত করা গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহিদুজ্জামান সরকার বলেন, পণ্যের কার্টুনে যে সব ঠিকানা ব্যবহার করা হয় তা অধিকাংশই ভুয়া। এ কারণে পণ্যগুলোর প্রকৃত মালিককে গ্রেফতার করা কঠিন হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ওই চক্রটিকে আটক করতে।

অন্যদিকে কাস্টম সূত্র জানায়, গত এক মাসের সফল অভিযান পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে প্রিভেনটিভ দলের ৩ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, রবিউজ্জমান, ইজাজুল হক ও শামসুল ইসলাম আকন।

অন্য কর্মকর্তাদের অনুপ্রাণিত করে এ বিষয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।

ঢাকা কাস্টম কর্তৃপক্ষের কমিশনার লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ শুরু করেছি। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে যেন কোনোভাবেই কোনো পণ্য বের হতে না পারে, তার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি। প্রিভেনটিভ দলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৫
আইএ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।