ঢাকা: আর মাত্র একদিন পরই শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশন। ঐক্যমতের সরকারের দ্বিতীয় বাজেট এবং ৬ষ্ঠ এ অধিবেশন শুরু হবে পহেলা জুন সোমবার বিকেল সাড়ে ৫ টায়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হবে। এর আগেই সংসদে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকেই চূড়ান্ত হবে বাজেট অধিবেশন কত দিন চলবে, কবে বাজেট পাস হবে। একই সঙ্গে বাজেটে অধিবেশনে কত ঘণ্টা সাধারণ আলোচনা হবে তাও নির্ধারণ হবে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে।
এর আগে গত বছর বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেট অধিবেশনে সাধারণ আলোচনা হয় প্রায় ৬০ ঘণ্টা। এতে সরকারি দল ও বিরোধী দলের অধিকাংশ সদস্যই আলোচনা অংশ নেন। সংসদ সদস্যরা বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বাজেট বিশ্লেষনের পাশাপাশি নিজ নির্বাচনী এলাকার সমস্যা তুলে ধরেন সংসদে।
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে নিজেদের দাবি দাওয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরার এটিই ভাল উপায় মনে করেন সংসদ সদস্যরা।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে আগামী ৪ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৯ম বারের মতো জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপন করবেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেট উত্থাপন। এর আগে বিএনপি’র এম সাইফুর রহমান সর্বোচ্চ ১২টি বাজেট দিয়ে এখনো শীর্ষস্থানেই আছেন।
গত অর্থবছরই আওয়ামী লীগ আমলের প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এসএএমএস কিবরিয়া কিবরিয়ার ৭টি বাজেট উত্থাপনের রেকর্ড ভঙ্গ করে দ্বিতীয় স্থানে আসেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বাজেট অধিবেশনের সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় জাতীয় সংসদের সিনিয়র সহকারী সচিব (আইন) নাজমুল হক এর সঙ্গে।
তিনি জানান, আগামী ৪ জুন বিকেল ৩ টায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট উত্থাপন করবেন। এর ২দিন পর সম্পূরক বাজেট ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেট পাস হবে। এরপর প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের উপর সাধারণ আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে ২৯ জুন অর্থবিল পাস হবে। এর একদিন পর অর্থাৎ ৩০ জুন নতুন অর্থ বছরের বাজেট পাস হবে।
এদিকে বাজেট অধিবেশনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু করেছে সংসদ সচিবালয়। এরইমধ্যে অধিবেশনে সঠিকভাবে বাজেট উপস্থাপনের জন্য ১৩টি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাজেট ডকুমেন্টস ও বাজেট বক্তৃতার কপির নিরাপত্তা বিধান, তা সংসদে পাঠানো ও বিতরণ, বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন এবং কূটনীতিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্য সংসদে এট্রি পাস বিতরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত(৩০ মে’২০১৫ পর্যন্ত) বাজেট অধিবেশনে ৭টি বিল জমা পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফাইনান্সিয়াল রিপোটিং বিল-২০১৪, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বিল-২০১৫, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৫, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো বিল-২০১৫, বাংলাদেশ চা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বিল-২০১৫, ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশন বিল-২০১৫ এবং supreme court judges (leave, pension and privilege) amendment বিল-২০১৫। এরমধ্যে কমিটিতে বিবেচনাধীন ৩টি, উত্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে ৪টি বিল।
গত ১১ মে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাজেট অধিবেশন আহ্বান করেন। এর আগে বর্তমান সরকারের পঞ্চম অধিবেশন শেষ হয় গত ২ এপ্রিল।
১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৭৮৬ কোটি টাকা দিয়ে বাজেট শুরু হলেও আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটের সম্ভাব্য আকার দাঁড়াচ্ছে ৩ লাখ ১শ কোটি টাকা। এ হিসেবে স্বাধীনতার পর ৪৪ বছরে দেশের জাতীয় বাজেটের আকার বাড়ছে ৩৮১ গুণ। প্রায় চার যুগের ইতিহাসে প্রথম বাজেট ঘোষণা করেছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে তিনি পরপর ৩টি বাজেট ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৫
এসএম/এনএস