ঢাকা: চলতি অর্থবছর ২০১৪-১৫ এর জুলাই-মার্চ মাস পর্যন্ত দেশের মোট রফতানির ৭২ দশমিক ৯৫ শতাংশ অর্জিত হয়েছে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর বিশ্লেষণী এক রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে এ-তথ্য।
ইপিবি’র রিপোর্ট থেকে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানিকৃত পণ্যের মূল্যমান ১৬ হাজার ৭০৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার যা পুরো রফতানির ৭২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
এর মধ্যে শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে রফতানি হয়েছে ১২ হাজার ৫৪৯ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার। যা পুরো রফানির ৫৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ১৬০ মিলিয়ন ডলাররের পণ্য। যা পুরো রফতানির ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে মূলত ওভেন পোশাক, নিটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত চিংড়ি আমদানি করে থাকে।
দেশের রফতানি মাত্র দুটি আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল হওয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনছুর।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘দেশের রফতানির সিংহভাগই যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এতে বাংলাদেশ দুই ধরনের ঝুঁকির মুখে আছে। একটি হলো অর্থনৈতিক আর অন্যটি রাজনৈতিক ঝুঁকি। কোনো কারণে যদি এই দুই বাজারে ধ্বস নামে তাহলে এর বিরূপ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের সার্বিক রফতানির ওপর। অথচ অর্থনীতির ওপরই একটি দেশ দাঁড়িয়ে থাকে।
বাংলাদেশের রফতানি যেহেতু এই দুই বাজারের ওপর অতি-নির্ভরশীল, সেহেতু ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছে করলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এদিকটায় সরকারের বিশেষ নজর দেয়া উচিত। আমাদের উচিত বিকল্প নতুন বাজারের সন্ধান করা। ’
দুটিমাত্র বাজারের ওপর রফতানির এই অতি-নির্ভরশীলতা দূর করতে ইপিবি প্রতিনিয়ত নতুন ও বিকল্প বাজার খোঁজার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করলেন সংস্থাটির ভাইস-চেয়ারম্যান শুভাশিস বসু।
এ-প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘দেশের রফতানির ৭২ শতাংশই যখন দুটিমাত্র বাজারে যায়, তখন কিছুটা ঝুঁকিতো থাকেই। আমরাও চাই রফতানির বাজারের ব্যাপ্তি ও পরিধি বাড়াতে। এটা মাথায় রেখেই আমরা বিভিন্ন দেশের পণ্য ও বাণিজ্যমেলায় অংশ নিচ্ছি। সেসব দেশের সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে আমরা আমাদের পণ্যসামগ্রী দেখাচ্ছি।
সম্প্রতি ব্রাজিলে আমরা এরকম একটি মেলায় অংশ নিয়েছি। আর্জেন্টিনা, চিলিতেও এ নিয়ে আমরা কাজ করবো। আশা করছি শিগগিরই আমরা বিকল্প কিছু নতুন বাজার তৈরি করতে পারবো। সেটা করা সম্ভব হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর রফতানির অতি-নির্ভরশীলতা কিছুটা হলেও কমবে। ’
ইপিবি থেকে জানা যায়, জুলাই-মার্চ মাসে বাংলাদেশের মোট রফতানি আয় হয়েছে ২২ হাজার ৯৪ মিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের একই সময়ে যা ছিলো ২২ হাজার ২৪২ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৫
সম্পাদনা: জেএম