ঢাকা: আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে পুঁজিবাজার বান্ধব উল্লেখ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বলেছে, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ বাড়ানোসহ সকল ধরনের বিনিয়োগ বাড়াতে প্রস্তাবিত বাজেট ভূমিকা রাখবে।
রোববার (০৭ জুন’২০১৫) ডিএসইর কার্যালয়ে আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর পক্ষে বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মিয়া ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বপন কুমার বালা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক শাকিল রজভী, খাজা গোলাম রসুল, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান প্রমুখ।
স্বপন কুমার বালা বলেন, আমরা মনে করি প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহ দিতে কর হার ২.৫ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে।
এতে পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আরও কোম্পানি আকৃষ্ট করতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করের হার ৪২.৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
একইসঙ্গে পাবলিকলি ট্রেডেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানির করহার ২৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি কি হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করলো তার ওপরে করহারের কোনো হেরফের হবে না। এটি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বালা বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি হতে প্রাপ্ত নগদ লভ্যাংশ আয়ের উপর করমুক্ত সীমা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অনিবাসী কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে পাওয়া নগদ লভ্যাংশ আয়ের উপর উৎসে কর হার কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।
কোম্পানি ও ফার্মের মূলধনী লাভের উপর উৎসে কর কাটার নিয়ম বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ট্রেকহোল্ডার, ব্যাংক, মার্চন্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে উৎস কর কেটে রাখার বিধান থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেন স্বপন কুমার বালা।
পুঁজিবাজারের জন্য বেশকিছু সুবিধা দেওয়া হলেও কিছু বিষয় বাজেট বক্তব্যে আসে উল্লেখ করে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী স্টক এক্সচেঞ্জকে ৫ বছর মেয়াদী ক্রমহ্রাসমান হারে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর হতে স্টক এক্সচেঞ্জকে কর দিতে হবে।
ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিমের আওতায় স্টক এক্সেচেঞ্জের যে সংস্কার চলছে তা চলমান রাখতে এবং পুজিবাজারের অবকাঠামোগত বিনিয়োগ সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এই কর অবকাশ সংশ্লিষ্ট পাঁচ বছরের প্রতিটির জন্য ১০০ শতাংশ হারে দেওয়া উচিত।
বালা বলেন, ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন জাতীয় সংসদের গত অধিবেশনে উপস্থাপন হয়েছে। কিন্তু এখনো আইনটি পাস হয়নি। আমরা আশা করছি চলতি অধিবেশনে আইনটি পাশ হবে। আইনটি পাস হওয়া এবং তার অধীনে ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠন ও বাস্তবায়ন পুঁজিবাজারে তথ্য সরবরাহে স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করবে।
বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের ট্রেকহোল্ডারদের লেনদেন ভিত্তিক ০.০৫ শতাংশ হারের উৎসে কর বাধা উল্লেখ করে এটি উৎসে কর্তন থেকে বাদ দিয়ে অ্যাসেসমেন্ট ভিত্তিক আরোপ করার প্রস্তাবও দিয়েছে ডিএসই।
একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের স্বার্থে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ বা এর বেশি লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আয়কর রেয়াত বহাল রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৫
এএসএস/এনএস/