ঢাকা: দেশের প্রথম সার্টিফিকেশন বডি (সনদ প্রদানকারী সংস্থা) হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট (আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা সনদ) অর্জন করল বিএসটিআই।
মান, পরিবেশ এবং খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক মান সনদ (আইএসও) যথাযথভাবে অনুসরণ করায় বিএসটিআই’র ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্টিফিকেশন উইং এ সনদ লাভ করেছে।
মঙ্গলবার (০৯ জুন) দুপুরে বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবসের এক সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এ সনদ প্রদান করেন।
অ্যাক্রেডিটেশন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ডিসিসিআই মিলনায়তনে ‘অ্যাক্রেডিটেশনঃ স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবায় সহায়তা করে (Accreditation: Supporting the Delivery of Health and Social Care)’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও দ্য চেম্বার অব কমার্স অ্যাণ্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)।
বিএবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। এতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) উর্ধ্বতন সহ সভাপতি হুমায়ুন রশীদ, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক মোঃ আবু আবদুল্লাহসহ সরকারি-বেসরকারি ল্যাবরেটরি, প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, সার্টিফিকেশন বডির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা দিতে দেশের হেলথ সার্ভিস ব্যবসায় অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়টি জনপ্রিয় করতে হবে। দেশি ল্যাবরেটরিগুলোর পরীক্ষণ ফলাফল সম্পর্কে জনগণের আস্থা বাড়াতে অ্যাক্রেডিটেড মেডিক্যাল টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে হবে। তারা টেস্টিং কিটের গুণগতমান নিশ্চিত করতে অ্যাক্রেডিটেড লেভেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
মোবাইল ফোন ও টাওয়ারের রেডিয়েশনের ফলে দেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে উল্লেখ করে যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এ ঝুঁকির ব্যাপকতা নির্ধারণ এবং দ্রুত বাসা-বাড়ি থেকে মোবাইল টাওয়ার সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন বক্তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম না হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এদের সেবার মানের ওপর সেবা গ্রহিতারা আস্থা রাখতে পারছেন না। ফলে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। এ প্রবণতা ঠেকাতে তিনি বিদেশি স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মত দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর গুণগতমান বৃদ্ধির তাগিদ দেন। তিনি হেলথ সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা, রোগীর তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা, টেস্টিং রিপোর্টের গুণগতমান, মেডিক্যাল ডিভাইসের স্ট্যান্ডার্ডস, টেস্টিং ল্যাবরেটরির অবকাঠামো ও জনবলের মান নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিকমান বা আইএসও (ISO) সার্টিফিকেশন অনুসরণের পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী ৭টি ল্যাবরেটরিকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করেন। এগুলো হচ্ছে- ডিভাইন ফেব্রিকস্ লি. এর সেন্ট্রাল টেক্সটাইল টেস্টিং ল্যাবরেটরি, আণবিক শক্তি কমিশনের অ্যানালাইটিক্যাল কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরি, পেট্রোমেক্স রিফাইনিং লি. এর পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট টেস্টিং ল্যাবরেটরি, সামুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল কেমিক্যাল টেস্টিং ল্যাবরেটরি, টুভ সুদ বাংলাদেশ (প্রা.) লি. এর টেক্সটাইল টেস্টিং ল্যাবরেটরি, বিসিআইসি’র টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরি এবং ডার্ড গ্রুপের বাংলাদেশ মেটারিয়াল টেস্টিং ল্যাবরেটরি।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড এ পর্যন্ত ২৩টি জাতীয় ও বহুজাতিক পরীক্ষণ ল্যাবরেটরি, ২টি ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরি এবং ১টি মেডিকেল ল্যাবরেটরিকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করেছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কারিগরি বাধা মোকাবেলা করে সহজেই বাংলাদেশি পণ্য রফতানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৫
এসইউজে/এএসআর