ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বড় ফ্ল্যাটে কর বৃদ্ধি, সাইনিং মানিতেও করের বোঝা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৫
বড় ফ্ল্যাটে কর বৃদ্ধি, সাইনিং মানিতেও করের বোঝা প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশের আবাসন শিল্প। আয়কর আইন ১৯৮৪ এর নতুন একটি সেকশনে সাইনিং মানিতে ১৫ শতাংশ কর ধার্য করায় বিপাকে পড়েছেন আবাসন শিল্প ব্যবসায়ীরা।



আইনের সেকশন ৫৩পি-তে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি আবাসন শিল্পে যুক্ত হন এবং জমির মালিকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সাইনিং মানি, জীবিকা নির্বাহের জন্য অর্থ, বাড়ি ভাড়া বাবদ কোনো অর্থ লেনদেন করেন সেই অর্থ থেকে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে।

দীর্ঘদিন থেকে গ্যাসসংযোগ বন্ধ থাকার পাশাপাশি সোলার প্যানেল সংযোগের শর্ত, বিদ্যুৎ সংযোগ, ক্রেতা পর্যায়ে ঋণের অভাব, যথোপযুক্ত বিনিয়োগের অভাব, জমির মূল্য, নির্মাণসামগ্রীর ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার এবং ভবনের নকশা অনুমোদনের দীর্ঘসূত্রতার কারণে আবাসন খাত দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে। নানা ধরনের অফার দিয়ে ক্রেতাদের এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করা যাচ্ছে না। এ জন্য বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে আবাসন শিল্প রায় ‘হাউজিং লোন’ নামে ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন ও আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ চান রিহ্যাব নেতারা।

এছাড়া ১৫০০ বর্গফুট আয়তনের বা এর চেয়ে ছোট ফ্যাট ক্রয়ে ক্রেতাদের ৭ থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশনে বিদ্যমান গেইন ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ফি ও মূল্য সংযোজন কর কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা, গৃহায়ন শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর কমিয়ে আনা এবং সব ভবনে অগ্নি নিরাপত্তার জন্য আগামী পাঁচ বছর অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও উপকরণ আমদানি শুল্কমুক্ত রাখারও প্রস্তাব করেন।

কিন্তু বাজেটে ভবন নির্মাণ খাতের জন্য বিদ্যমান মূসক কমিয়ে নতুন কয়েকটি ধাপে বিভক্ত করার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে ছোট ফ্ল্যাটের জন্য নিবন্ধন ব্যয় কমলেও বড় ফ্ল্যাটের জন্য ব্যয় বাড়বে।

উল্লেখ্য, বিদ্যমান ৩ শতাংশ মূসকের হার পরিবর্তন করে ১১০০ বর্গফুট পর্যন্ত ১.৫ শতাংশ ১১০১ বর্গফুট থেকে ১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত ২.৫ শতাংশ ও ১৬০০ বর্গফুটের বেশি আয়তনের ক্ষেত্রে ৪.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে এ খাতে ক্রেতা পর্যায়ের বড় বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। এরপর নতুন করে করারোপ করা হলে ব্যবসায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

আবাসন শিল্প ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভুঁইয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। যদি এ ধরনের কোনো করারোপ করা হয় তাহলে এই শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য আমরা সরকারের কাছে এ ধরনের করারোপ করা হয়ে থাকলে তা প্রত্যাহার করে শিল্পকে বিকশিত করতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাবো।

এ প্রসঙ্গে রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি তৌফিক এম সেরাজ বলেন, মূসক কর কমানোটা ইতিবাচক। কিন্তু বড় ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে বৃদ্ধিটা এ খাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে।

ডিভাইন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, এ খাত থেকে আমরা সরকারকে বছরে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স দেই। আমাদের কারণে বিদেশে অর্থ পাচার অনেক কমে গেছে। বিদেশ থেকে প্রচুর রেমিট্যান্স আনতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এ জন্য সরকারের প্রয়োজন এ খাতটিকে বাঁচিয়ে রাখা। ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরুসাহিত করা ঠিক হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৫
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।