ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভ্যাটে মুখ থুবড়ে পড়বে একশ কোটি টাকার ই-কমার্স

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
ভ্যাটে মুখ থুবড়ে পড়বে একশ কোটি টাকার ই-কমার্স ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অনলাইনে কেনাবেচা বা ই-কমার্সের ক্ষেত্রে চার শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে একশ কোটি টাকার ব্যবসার এ খাত মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন ই-কমার্সের উদ্যোক্তারা।
 
ই-কমার্সে ভ্যাট আরোপ নয়, বরং ভর্তুকি প্রদানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন অনলাইনে কেনাবেচার উদ্যোক্তাসহ প্রযুক্তিবিদগণ।


 
বুধবার (১৭ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসে (বেসিস) ই-কমার্স অ্যালায়েন্স আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবি করা হয়।
 
‘পলিসি সার্পোট ফর দ্য লোকাল ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অনলাইন কেনাবেচায় ৪ শতাংশ ভ্যাট আরোপ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ নীতির পরিপন্থী বলেও মন্তব্য এসেছে।
 
২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে অনলাইনে কেনাবেচার ওপর নতুন করে চার শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
 
এর প্রতিক্রিয়ায় গোলটেবিল আলোচনায় এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বিজিএমইএ’র প্রাক্তন সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সরকার একদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায়, অন্যদিকে অনলাইনে কেনাবেচায় ভ্যাট আরোপ করবে- এটা তো হতে পারে না। ই-কমার্স খাত আগে বড় হোক, ম্যাচুরিটির পর্যায়ে যাক। তারপর ভ্যাট-ট্যাক্স আনেন। পাশে থাকবো।
 
প্রধানমন্ত্রী ও তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে বুঝিয়ে ই-কমার্সখাতের অসুবিধাগুলো দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
 
বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, যুব সমাজ যখন নিজেরা কিছু করার চেষ্টা করছে, তখন সরকার তাদের উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করছে। ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপ সরকারের নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।
 
সভাপতির বক্তব্যে বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, ই-কমার্সে সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও ভুল নীতির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। এই খাতে ভ্যাট আরোপের ফলে তরুণ উদ্যোক্তারা উৎসাহ হারাবে। ফলে বিদেশি উদ্যোক্তাদের হাতে ই-কমার্স খাতের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে।  
 
সংগঠনের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, ই-কমার্স ক্ষেত্রে বছরে একশ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। ভ্যাট আরোপ করা মানে এই একশ কোটি টাকার ব্যবসা ধ্বংস করা। এই ভ্যাট আরোপের ফলে ই-কমার্স খাত মুখ থুবড়ে পড়বে। ডিজিটাল বাংলাদেশে কেনাবেচা নন-ডিজিটাল ফরমেটে চলে যাবে।
 
জবাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা ভ্যাট প্রত্যাহার করে যেন ব্যালান্স (ভারসাম্য) রাখা হয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি ডিরেক্টর আলী কামরুন আল জাহিদ বলেন, ভ্যাট আরোপ নয়, এই খাতে ভুর্তকি দেওয়া উচিত।
 
মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রোকনুজ্জামান, ঢাকা চেম্বারের সহসভাপতি সোয়েব চৌধুরী, সিওর ক্যাশের সফটওয়্যার সল্যুশন সহযোগী প্রগতি সিস্টেমের সিইও শাহাদাত খান, চালডাল, ই-কোরিয়ার, আইটি বাজার২৪ডটকম, ই-ওয়ালেট ছাড়াও অনলাইন কেনাবেচার উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
 
আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যনেজার (ফরেন এক্সচেঞ্জ) জাকির হোসেন চৌধুরী, বেসিসের মহাসচিব উত্তম কুমার পাল ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

গোলটেবিল আলোচনার সহযোগিতায় ছিল আইবিপিসি, মাস্টারকার্ড ও দ্য ডেইলি স্টার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫/আপডেটেড: ১৯২৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।