জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আগামী ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর সময় দেশের পোশাক রপ্তানি খাত থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। রোববার সংসদে এ লক্ষ্যমাত্রার কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা ও সমালোচনা উপেক্ষা করে আমার পোশাক শিল্পের রপ্তানির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অধিকাংশ উন্নত দেশে শুল্কমুক্ত কোঠায় পণ্য রপ্তানি করে যাচ্ছি।
এ সময় তিনি বাজেটে তৈরি পোশাক রপ্তানির উপর আরোপিত উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে সহনীয় হারে নির্ধারণের অনুরোধ জানান অর্থমন্ত্রীর প্রতি।
বাংলাদেশকে নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার কথা উল্লেখ করে এ সময় তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যারা বাংলাদেশকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন তারাও এখন বলতে বাধ্য হচ্ছেন যে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
রোববার (২৮ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন বাণিজ্য মন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, তা ভবিষ্যতে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে। এতে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানিতে উভয় দেশই ভূমি ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিপিপি বাস্তবায়ন হলে ভিয়েতনামের মতো আমরাও যুক্তরাষ্ট্রে ডিউটি ফ্রি সুবিধায় পণ্য রফতানি করতে পারবো। তৈরি পোশাকশিল্পে আমরা একটু যত্নবান হলে এটা সম্ভব।
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্দোলন, নির্বাচন ও রাজনীতি সর্বক্ষেত্রে খালেদা জিয়া পরাজিত হয়েছেন। সবকিছু হারিয়ে উনি এখন ইফতার মাহফিলে মোনাজাত করতে গিয়ে বলেছেন, এই সরকারের ওপর গজব নাজিল হোক! ‘ক্যান উই ইমাজিন’(আমরা কী ভাবতে পারি)! কী নিচ, কী হীনমন্য নেত্রী উনি! ভাবতেও অবাক লাগে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ঘরে ফিরে যাবেন না। কিন্তু দেশের মানুষসহ গোটা বিশ্ব অবাক তাকিয়ে দেখলো, উনি পরাজিত হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে শূন্য হাতে ঘরে ফিরে গেলেন!
খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করি, এখন কোথায় আমার মায়েরা, বোন, ট্রাক ড্রাইভাররা! কেন তাদেরকে পুড়িয়ে হত্যা করলেন? এর জবাব কি তিনি দেবেন! খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছেন, একদিন তাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।
বিএনপির আমলের অপশাসনের চিত্র তুলে ধরে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল কোনো বছরই ৪ শতাংশের বেশি জিডিপি অর্জিত হয়নি। আর আমাদের সময় এবার অর্জন হয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
আমরা বিশ্বে যে মর্যাদা লাভ করেছি, সে মর্যাদা আগে আমাদের ছিল না। স্বাধীনতার পর মাথাপিছু আয় ছিল ৫০ থেকে ৭০ ডলার,এখন ১,৩০০ ডলার।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ নিয়ে সমালোচকদের কথা তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার পর বিশ্বব্যাংক বলেছিল দেশটি স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু সব সময়ই নির্ভরশীল হতে হবে বিদেশি সাহায্যের ওপর।
বিশ্বব্যাংকের সূত্র ধরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন, দেশটি(বাংলাদেশ) একটি তলাবিহীন ঝুঁড়ি। দেশটিতে যতই সাহায্য দেওয়া হোক, এতে কোনো কাজে আসবে না। আজ তারাই আবার মন্তব্য করছে, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।
মন্ত্রী দাবি করেন, রমজান মাসেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ৩ বছরের জন্য রফতানি-আমদানি নীতি করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৫
এসএম/আরআই
** ১২ বছরে ৮১ নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র
** বিএসটিআই পরীক্ষিত পণ্য গ্রহণ করবে ভারত