ঢাকা: পাখি নয়, এবারের ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর বিপণি বিতানগুলোতে আরেকটি পোশাক তরুণীদের নজর কেড়েছে। নামটাও বাহারি।
ভারতীয় টিভি সিরিয়াল কিরণমালার মূল চরিত্রের নামকরণে বাজার ছেয়ে যাচ্ছে কিরণমালা নামক এ পোশাকে। তার সাথে তৈরি হয়েছে নানা আশঙ্কাও।
রাজধানীর নিউমার্কেট, শ্যামলী স্কয়ার, মিরপুর-১ ও মিরপুর ১০ এর মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমনই চিত্র।
নিউমার্কেটের গাউছিয়ার জুয়েল ফ্যাশনে কিরণমালা নামে এসেছে ফ্লোর টাচ, সালোয়ার কামিজ, জামা। এসব পোশাকে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন দোকানটির বিক্রেতারা।
তারা বলেন, শব-ই-বরাতের পর থেকের ঈদের ভিড় শুরু হওয়ার কথা থাকলে এবার তা হয়নি। যা কিছু ক্রেতা এসেছে তাদের নজর এই কিরণমালার দিকে। আমাদের এখানে এসব কিরণমালার দাম পড়বে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
৭ রোজা শুক্রবার হওয়ায় ওই দিন থেকে মার্কেট যেমন জমে উঠবে তেমনি কিরণমালার দেখাও বেশি মিলবে।
যেসব বিক্রেতা এখনো দোকানে কিরণমালা নিয়ে আসেন নি তারাও ছুটছেন একই দিকে এমনটাই বোঝা যায় রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারের টেকচার শো-রুমের বিক্রেতা সাইদুর রহমানের কথায়।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবারের ঈদে টেকচারে মূল আকর্ষণ থাকবে কিরণমালা টপস। এসব টপসের দাম ১হাজার ৩০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা।
ভারতীয় সিরিয়ালের কিরণমালা টপস পড়তেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, কিরণমালা টপস পড়বে কেন। এটাতো ভৌতিক সিরিয়াল। তবে সে তো শাড়ি- সালোয়াড়- কামিজও পড়েন না। কিন্তু তাও তো মার্কেটে এসেছে। আসলে ঈদ বাজার নামের ওপরই সব চলে।
ক্রেতারা যেহেতু কিরণমালার দিকে ঝুঁকছেন তাই আমরা কিরণমালা টপস নিয়ে আসছি।
মিরপুর-১ এর ‘কয়েন’ শো-রুমে ঢুকতেই সোমা জান্নাত নামক ক্রেতার দেখা মিলে। সোমা জান্নাত খুঁজছেন কিরণমালা সালোয়ার কামিজ। দোকানটির বিক্রেতারা জানালেন তাদের এখানে ৭ রোজার মধ্যেই কিরণমালা পাওয়া যাবে।
একই চিত্রের দেখা মিললো মিরপুর-১০ এর মার্কেটে। বিক্রেতারা জানান আসন্ন ঈদ বাজারে এরইমধ্যে চাহিদার বাজার দখল করে নিয়েছে কিরণমালা।
কিরণমালা: ভারতীয় বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল স্টার জলসার ডেইলি সোপ কিরণমালা। ডেইলি সোপটির মূল চরিত্রের কিরণমালা নামে অভিনয় করছেন রুকমা রায়।
ভারতীয় পুরানের কাহিনী অবলম্বনে তৈরি ডেইলি সোপটির কিরণমালা চরিত্রটি পোশাক আশাকও তখনকার সময়য়োপযোগী। কিন্তু বাংলাদেশের ঈদ বাজারে কিরণমালা নামক যেসব পোশাক এসেছে তার কোনো পোশাকই কখনো পড়েন নি চরিত্রটি।
আশঙ্কা: কিরণমালাকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যেই নানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ক্রেতা বিক্রেতা উভয় মহলেই।
মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের ছাত্রী মৌসুমী ইসলামের মা রুবাইয়া ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর পাখি ড্রেসের জন্য কয়েকজন আত্মহত্যা করেছে। এসব আমরা পত্রপত্রিকায় দেখেছি। এইবার বাজারে যেভাবে কিরণমালা পোশাক আসছে তাতে নতুন কোনা দুর্ঘটনা ঘটতেও পারে।
অন্যদিকে শ্যামলী স্কয়ারের ফাতেমা’স কালেকশন এর কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, পাখি ড্রেসকে কেন্দ্র করে গত বছর নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া কিরণমালার নামে যেসব পোশাক এসেছে তা কখনোই সে পড়েনি। এতে করে এ বছর নতুন কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিরণমালা পোশাক আমরা বিক্রি করবো না।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৫
ইউএম/এনএস/