ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গাড়ি আমদানিকারকরা মংলা বন্দরমুখি

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
গাড়ি আমদানিকারকরা মংলা বন্দরমুখি ছবি: মানজারুল ইসলাম / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মংলা থেকে ফিরে: চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের চেয়ে গাড়ি আমদানিতে মংলা বন্দরে সুবিধা বেশি। তুলনামূলক খরচ কম, নিরাপদে গাড়ি রাখার সুবিধার কারণেই চট্টগ্রামের চেয়ে মংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আনতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ছে।



আমদানিকারকরা বলছেন, মংলায় গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা একেবারেই নেই। আমদানি খচর কম। এ ছাড়া গাড়ি খালাসে কাস্টমসের জটিলতাও কম। যার কারণে অনেক আমদানিকারক চট্টগ্রাম বাদ দিয়ে মংলার দিকে ঝুঁকছেন।

মংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমন্বয় কমিটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পর পর দুইবার ক্ষমতায় আসায় দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সচল হয়েছে বন্দর। যে কারণে এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছেন আমদানিকারকরা।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় মংলায় গাড়ি আমদানি ও রাখার খরচ অনেক কম। চট্টগ্রাম বন্দরে  গাড়ি রাখার যেসব সুবিধা নেই মংলায় তা আছে। সবকিছু মিলিয়ে বন্দরটি ব্যবহারের জন্য দিন দিন আমদানিকারকরা এ বন্দরমুখি হচ্ছেন।

মংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত বন্দরে গাড়ি নিয়ে জাহাজ এসেছে ১২০টি। যাতে গাড়ি এসেছে ৪৭ হাজার ৮২টি। এছাড়া ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গাড়ির জাহাজ এসেছে ৩৬টি। গাড়ি এসেছে ৯ হাজার ১শ’ ৭১টি। বর্তমানে খালাসের অপেক্ষায় বন্দরে গাড়ি আছে ৪ হাজার ২শ’ ৪৪টি। চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি প্রতি ওয়্যার রেন্ট (রাখার ভাড়া)  চারশত ৫২ টাকা সেখানে মংলা দিতে হয় ১২৯ টাকা ২৯ পয়সা।

মংলা বন্দরের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের চেয়ে মংলা বন্দরে গাড়ি আমদানিকারকদের সুযোগ সুবিধা বেশি। মংলায় গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা একেবারেই নেই। এ ছাড়া গাড়ি খালাসে কাস্টমসের জটিলতাও কম।

তিনি জানান, মংলা বন্দরে গাড়ি রাখার জন্য ২টি ইয়ার্ড, ৪টি সেড ঘর, ২টি ওয়ার হাউজ রয়েছে।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, ২০০৯ সালের জুন মাস থেকে এ বন্দরের মাধ্যমে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। অধিকাংশ গাড়ি আমদানিকারক ঢাকার। যাদের মংলা বন্দর থেকে গাড়ি নিতে চট্টগ্রাম থেকে কম খরচ ও সময় লাগে। যে কারণে গাড়ি আমদানিরকরা এখন মংলা বন্দর ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

বাগেরহাট-৩ আসনের (রামপাল-মংলা) সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, ২০০৯ সালের শুরুতেই দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখার প্রয়াসে মংলা বন্দরের উন্নয়নের দিকে সরকার বিশেষ গুরুত্ব ও নজর দেয়।

তিনি জানান, বন্দরটির উন্নয়নের জন্য ২০০৯ সালের পর হতে প্রায় ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৮টি উন্নয়ন প্রকল্প ও ৪টি উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন কাজ হাতে নেয়া হয়। যার মধ্যে ৫টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং সবগুলো কর্মসূচির বাস্তবায়ন কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে দিন দিন বন্দরের প্রতি আমদানিকারকদের আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে গাড়ি আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম বাদ দিয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে মংলা বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
এমআরএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।