ঢাকা: দেশের হাওর এলাকার সাত জেলায় বোরো ধান চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। বুধবার (০১ জুলাই) সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দেশের মোট চাল উৎপাদনের ৫৫ শতাংশ হয় বোরো মৌসুমে। এটা সেচনির্ভর। তাই কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মতিয়া চৌধুরী বলেন, যান্ত্রীকিকরণের মাধ্যমে ব্যয় কমিয়ে আনা, ফসল চাষে সময়কাল কমিয়ে আনা, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহারে উৎপাদন বাড়িয়ে কৃষকের আয় বাড়ানো, আধুনিক কৃষিতে কৃষককে এগিয়ে আনাসহ বোরো চাষ নিশ্চিতে ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রায় সব জেলায় কম বেশি বোরো চাষ হলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকা বোরো চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এসব অঞ্চলের সাত জেলা সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫৭ উপজেলার ২৭৪টি ইউনিয়নে ৩৭৩টি হাওর রয়েছে। হাওর অঞ্চলে ৯ দশমিক ১৯ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। আর এতে ফসল হয় ৩৫ দশমিক ৬০ লাখ মেট্রিকটন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার এক ফসলী এলাকা হিসেবে হাওর এলাকায় বোরো চাষে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে বদ্ধপরিকর। সময়মতো ভালো বীজ সরবরাহ বৃদ্ধি, সার সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, সেচ সুবিধা সম্প্রসারণে এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
তিনি জানান, হাওর এলাকায় বোরো ফসল নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে যান্ত্রীকিকরণের মাধ্যমে চাষের সময় কমিয়ে আনা ও ফসল কর্তন দ্রুত করে ঝুঁকি কমিয়ে আনতে কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে রাইস প্লান্টার ও রিপার যন্ত্র সরবরাহের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে সরকার ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রণোদনা দিচ্ছে। এতে কোনো অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন হবে না। প্রস্তাবিত ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ ‘কৃষি পুর্নবাসন সহায়ক’ খাতের অর্থ থেকে এ সংস্থান করা হচ্ছে।
মতিয়া চৌধুরী জানান, প্রতি তিন ইউনিয়নে একটি করে ২৭৫টি রিপার দেওয়া হবে। কর্মসূচির আওতায় ১০০ জন কৃষক, ৪২০ জন মেকানিক/ড্রাইভার, ৫০০ জন এসএএও এবং ৬০ জন কৃষি কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
হাওর এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে পরিচালিত কৃষক দল বা আইপিএম/আইসিএম/সিআইজি ক্লাবগুলোকে এসব যন্ত্র বরাদ্দ দেওয়া হবে। বরাদ্দ যন্ত্রগুলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের এসএএও’র তত্ত্বাবধানে থাকবে। আর নির্বাচিত কৃষক দলই যন্ত্র সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবেন।
যন্ত্রগুলো সরকারি সম্পত্তি। বিধায় কোনো ব্যক্তি মালিকানা হিসেবে নেওয়া যাবে না। উপজেলা পর্যায়ে কৃষি পুনর্বাসন ও বাস্তবায়ন কমিটি যন্ত্র সরবরাহের জন্য কৃষক দল নির্বাচিত করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৫/আপডেট: ১৩৩০
এসএমএ/এএ