ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলানিউজকে বন্দর চেয়ারম্যান

‘সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত ছুঁয়েছে মংলা বন্দর’

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৫
‘সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত ছুঁয়েছে মংলা বন্দর’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: ২০০৯ সালের পর থেকে মংলা বন্দরের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৫২ কোটি টাকা। নেয়া হয়েছে ৮টি উন্নয়ন প্রকল্প ও ৪টি উন্নয়ন কর্মসূচি।

ইতিমধ্যে ৫টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং সবগুলো কর্মসূচির বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে মংলা বন্দর ছুঁয়েছে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।

সম্প্রতি বন্দর ভবনে বাংলানিউজকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ সব কথা বলেন মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ।

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন,‘১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা এ্যাংকোরেজ নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এ বন্দর। ১৯৫৪ সালে বন্দরটি বর্তমান স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৬ সালে রূপান্তরিত হয় স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে, নামকরণ হয় চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে বর্তমান নাম মংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এ বন্দর।

তবে প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই বন্দরটি ছিলো অবহেলিত। সর্বশেষ ২০০২-০৩ অর্থ বৎসর হতে ২০০৮ সাল পর্যন্ত লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসাবে কোন রকমে টিকে ছিলো বন্দরটি।  

কিন্তু বর্তমান সরকার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য মংলা বন্দরের উন্নয়নের দিকে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব ও নজর দেয়। মৃতপ্রায় মংলা বন্দরকে কার্যক্ষম ও কর্মচঞ্চল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এর অংশ হিসেবে ২০০৯ সালের জুন মাস থেকে এ বন্দরের মাধ্যমে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর হয়ে ধীরে ধীরে গতিশীলতা অর্জন করতে থাকে বন্দরটি।

রিয়ার এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বন্দরের অবকাঠামোর অনেক উন্নয়ন হওয়ায় ইতিমধ্যে নেপাল,ভুটান ও ভারত মংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছে। গত ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় মংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এছাড়া ভুটান ও নেপালের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, মংলা বন্দর এলাকায় ২০৫ একর জমিতে নতুন অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু, খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণ, খুলনা-মংলা রেল লাইন স্থাপন ও ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে মংলা বন্দর কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে।

বন্দর চেয়ারম্যান জানান, বর্তমান সরকার বন্দরের সীমাবদ্ধতাগুলোর সমাধান করেছে। ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। এ কারণে বন্দর ব্যবহারকারীরা দিন দিন এ বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন। বন্দরে জাহাজ ও কার্গো ভেসেল আসা বেড়ে গেছে।   প্রতিবছরই বাড়ছে বন্দরের আয়।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জুন মাস থেকে এ বন্দরে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। অধিকাংশ গাড়ি আমদানিকারকই ঢাকার। মংলা বন্দর থেকে গাড়ি নিতে চট্টগ্রাম বন্দরের থেকে খরচ ও সময় কম লাগে। যে কারণে গাড়ি আমদানিরকরা এখন মংলা বন্দর ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

রিয়ার এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, মংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। বন্দর উন্নয়নের জন্য এ সরকারের সদিচ্ছা ও সক্রিয় ভূমিকায় মংলা বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন সুবিধাদি সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি জানান, মংলা ইপিজেডে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অনেকে মংলা বন্দরের আশপাশের জায়গা কিনছেন। বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জায়গা লিজ নিচ্ছেন। এতে দ্রুত শিল্পায়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৫
এমআরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।