ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

আদিত্য আরাফাত, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৫
অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

ঢাকা: অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আব্দুল হামিদসহ প্রতিষ্ঠানটির  পাঁচ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে বন্ধ থাকা প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ঋণদানের অভিযোগসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।



সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি কমিশন তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আব্দুল হামিদসহ অপর যে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন, সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হক, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মিজানুর রহমান, ডিজিএম জওহর লাল রায়, এজিএম ফজলুল হক এবং এজিএম কিবরিয়া।

রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকটির এ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পরষ্পর যোগসাজশে বন্ধ প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ঋণদানের পাশাপাশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ রয়েছে।  
 
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, কয়েকবছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা তানাকা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাইটাস স্পিনিং মিলসকে অগ্রণী ব্যাংকের শিল্পব্যাংক করপোরেট শাখা ৫০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।

একই প্রতিষ্ঠানের মালিক মাহিনের মালিকানাধীন ‘সুইস কোয়ালিটি প্যারের বিডি লিমিটেড’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ফেসভ্যালু ৩০ কোটি টাকা হলেও ২০১৩ সালে ১২০ কোটি ইউরো মূল্য ধরে ঋণ দেওয়া হয়।

মাহিনের আরেক প্রতিষ্ঠান ‘মারহাবা সিনথেটিক মিলস লিমিটেল’সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৪শ’ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকটির এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদ, ডিএমডি মিজানুর রহমান খান এবং জওহর লাল রায় ব্যক্তিগত আগ্রহে এসব ঋণ মঞ্জুর করেন বলে দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে। অপর দুই এজিমও পরোক্ষভাবে এতে জড়িত ছিলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, সিকদার গ্রুপকে মতিয়ারা পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন এবং হেলিকপ্টার কেনার জন্য ঋণ দেওয়া হয়। ব্যাংকটির মিজানুর রহমান প্রিন্সিপাল শাখার মহাব্যবস্থাপক থাকাকালে নেপথ্যে থেকে জজ ভূঁইয়া গ্রুপের ৮টি প্রতিষ্ঠানকে অন্তত ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করান। এমএম টেক্সটাইল অ্যান্ড ইয়ার্ন ট্রেডিং লিমিটেড, জজ স্পিনিং মিলস লিমিটেড, মিউচুয়াল কনসার্ন করপোরেশন লিমিটেড, মাহিদ এপারেলস লিমিটেড, মাহিদ এক্সপো ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল লিমিটেড, এম এম নিটিং অ্যান্ড এমব্রয়ডারি লিমিটেড, জাকিয়া কটনটেক্স লিমিটেড এবং জে এম ক্লাসিক ফ্যাশন লিমিটেড’কে যে ঋণ দেওয়া হয়েছে যা ফেরত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
 
ঋণ মঞ্জুরের শর্তাবালি পূরণ না হলেও ‘সরদার এপারেলস’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে নেপথ্যে থেকে ঋণ মঞ্জুর করান তিনি। হলমার্ক কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত বিটিএল মাহতাবকে অর্থায়নে সহায়তা করেন ডিএমডি মিজানুর রহমান।

ভুয়া দলিল মর্টগেজ রেখে মিজান টাওয়ার এবং রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের জমির ওপর স্থাপিত মিজান মেডিকেল কলেজকে  ব্যক্তিগত আগ্রহে অর্থায়ন করেন তিনি।

কোনো প্রয়োজন না থাকলেও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে দিলকুশায় মিজানের সানমুন টাওয়ারে স্পেস কিনে সেখানে অগ্রণী ব্যাংকের অফিস স্থানান্তর করেন ডিএমডি মিজানুর রহমান।

এসব অভিযোগ দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হলে তিনি তা বাছাই কমিটিতে পাঠান। বাছাই কমিটি অনুসন্ধানের সুপারিশ করলে কমিশন তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

দুদক সূত্র জানায়, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসে সংস্থাটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে নথিপত্র চেয়ে নোটিশ পাঠাবে। প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবি নোটিশ পাঠাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৫
এডিএ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।