ঢাকা: বিমা কোম্পানির পরিচালক সংখ্যা কতো হবে তা নিয়ে দু’রকম তথ্য দিচ্ছে দুই মন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত আইনের গেজেটে পরিচালক সংখ্যা ২০ জন উল্লেখ করা হয়েছে।
দুই আইনেই পরিচালকদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- উদ্যোক্তা পরিচালক, জনগণের অংশের শেয়ারগ্রহিতা পরিচালক ও নিরপেক্ষ পরিচালক। তবে এই পরিচালক বিন্যাসেও অর্থমন্ত্রণালয়ের গেজেট আকারে প্রকাশিত আইন ও আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আইনে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের গেজেট আকারে প্রকাশিত আইন ও আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আইনে দুই রকম তথ্য থাকায় তা বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এ নিয়ে একাধিক কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বাংলানিউজের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকি এ রকম বিভ্রান্তিকর তথ্যে বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও (আইডিআরএ) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তবে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আইন কখনো দুই রকম হতে পারে না। সব ক্ষেত্রে আইনে অবশ্যই একই ধরনের তথ্য থাকবে।
তিনি বলেন, গেজেট আকারে প্রকাশিত বিমা কোম্পানির আইন ও আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আইনে দুই রকম তথ্য প্রকাশের বিষয়টি আমার জানা নেই। দুই জায়গায় কেন দুই রকম তথ্য দেওয়া হচ্ছে সে বিষয়টি আমি দেখবো।
গেজেট আকারে প্রকাশিত আইন ও আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আইন দু’টিই ‘বীমা আইন, ২০১০’ এবং ‘২০১০ সালের ১৩ নম্বর আইন’ নামে অবিভিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে দু’টি আইনেই প্রকাশের তারিখ দেখানো হয়েছে ২০১০ সালের ১৮ মার্চ।
গেজেট আকারে প্রকাশিত আইনে বলা হয়েছে, ‘বিমাকারী কোম্পানি আইনের অধীনে নিবন্ধিত হলে, উহার সংঘস্মারক বা সংঘবিধিতে যাই থাকুক না কেন উহার পরিচালক সংখ্যা ২০ জনের অধিক হবে না। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা পরিচালক থাকবে ১২ জন, জনগণের অংশের শেয়ারগ্রহিতা পরিচালক থাকবে ৬ জন এবং নিরপেক্ষ পরিচালক থাকবে ২ জন।
অপরদিকে আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যে বিমা আইন পাওয়া যাচ্ছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিমাকারী কোম্পানি আইনের অধীনে নিবন্ধিত হলে, উহার সংঘস্মারক বা সংঘবিধিতে যাই থাকুক না কেন উহার পরিচালক সংখ্যা ১৫ জনের অধিক হবে না। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা পরিচালক থাকবে ৬ জন, জনগণের অংশের শেয়ারগ্রগিতা পরিচালক থাকবে ৬ জন এবং নিরপেক্ষ পরিচালক থাকবে ৩ জন।
দু’টি আইনেই বিমাকারীর পরিচালনা পর্ষদের এই তথ্য আইনের ৭৬(১)ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। আর ৭৬(২) ধারায় বলা হয়েছে- শেয়ারগ্রগিতারা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালক নির্বাচন করবেন। এক্ষেত্রে দু’টি আইনেই একই কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য কুদ্দুস খান বাংলানিউজকে বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বিমা আইন নিয়ে যে তথ্যই প্রকাশিত হোক না কেন, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে গেজেট আকারে প্রকাশিত আইনে যে তথ্য আছে আমরা সেটিই গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আইনে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তা ভুল। আসলে আইন মন্ত্রণালয়ে যারা দায়িত্বে আছেন তারা কোন কাজের না। তারা কোন কাজও করে না। এমন কি নিজেদের ওয়েবসাইটটিও আপডেট করে না।
এদিকে দু’টি আইনেই ৭৭ ধারায় মনোনীত পরিচালক মনোনয়নের বিধি-বিষেধের বিষয়ে একই তথ্য দেওয়া হয়েছে। একই ধরনের কথা বলা হয়েছে ৭৮ ধারায় পরিচালকের চাকরি করার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধে। পরিচালক পর্ষদের সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের (৭৯ ধারায়) বিষয়েও দু’টি আইনে একই ধরনের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৫
এএসএস/জেডএম