ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘চট্টগ্রামের চেয়ে মংলা বন্দরে সুবিধা বেশি’

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩০ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১৫
‘চট্টগ্রামের চেয়ে মংলা বন্দরে সুবিধা বেশি’ ছবি: মানজারুল ইসলাম/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের চেয়ে মংলা বন্দরের সুবিধা বেশি। বিশেষ করে গাড়ি আমদানিতে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে মংলা বন্দরের সুবিধা অনেক বেশি।

তুলনামূলক খরচ কম, নিরাপদে গাড়ি রাখার সুবিধার কারণেই চট্টগ্রামের চেয়ে মংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আনতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ছে।

বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমন্বয় কমিটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।
অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন মালিকগ্রুপের মহাসচিব ও খুলনা চেম্বারের সহ-সভাপতি এবং খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পর পর দুইবার ক্ষমতায় আসায় দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সচল হয়েছে বন্দর। যে কারণে এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছেন আমদানিকারকরা। ইতিমধ্যে ভারত মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য চুক্তি করেছে। এছাড়া নেপাল ও ভুটান আমদানি-রফতানিতে কলকাতার হলদিয়ার পরিবর্তে মংলা বন্দর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় মংলায় গাড়ি আমদানি ও রাখার খরচ অনেক কম। চট্টগ্রাম বন্দরে  গাড়ি রাখার যে সব সুবিধা নেই মংলায় তা আছে। সবকিছু মিলিয়ে বন্দরটি ব্যবহারের জন্য দিন দিন আমদানিকারকরা এ বন্দরমুখী হচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, বিএনপি-জামাতের আমলে মুখ থুবড়ে পড়া মংলা বন্দর এখন সচল। সরকার বন্দরের উপর শুভ দৃষ্টি দেয়ায় মংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে এসেছে গতি। ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য মংলায় অর্থনৈতিক জোন (অঞ্চল) তৈরি করছে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে।

সাইফুল ইসলাম বলেন, মংলা বন্দর দিয়ে অামদানিকৃত সারের ৫০ শতাংশ এবং খাদ্য সামগ্রীর ৪০ শতাংশ খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন নির্ধারিত পরিমাণের চেয়েও বেশি হারে সার ও খাদ্যশস্য খালাস হচ্ছে এ বন্দরে। বন্দরের অবকাঠামো ও সার্বিক উন্নয়নের কারণে বিদেশি জাহাজ আগমনের ফলে এটি সম্ভব হচ্ছে।

তিনি বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মিত হলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ভাগ্য বদলে যাবে। এর ফলে মংলা বন্দরের সাথে রাজধানীসহ সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে।

যেখানে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানিকৃত পণ্য রাজধানীতে নিতে ১২/১৪ ঘণ্টা সময় লাগে সেখানে পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে মংলা থেকে ঢাকায় পণ্য নিতে সময় লাগবে মাত্র ৫/৬ ঘণ্টা।

অ্যাডভোকেট সাইফুল বলেন, খান জাহান আলী বিমান বন্দর, খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মিত হলে মংলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। বিনিয়োগকারীরা বিমানযোগে মংলা বন্দরে যেমন আসতে পারবেন তেমনি অপার সৌন্দর্যে ভরপুর সুন্দরবনকে দেখতেও দেশি বিদেশি পর্যটকরা আসতে পারবেন। রেল যোগাযোগের মাধ্যমে মংলা বন্দরের সঙ্গে সারা দেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। সব মিলিয়ে মংলা বন্দর অর্থনৈতিকভাবে আরো সমৃদ্ধ হবে। এতে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে তেমনি এ অঞ্চলের দারিদ্র হ্রাস পাবে।

মংলায় একটি পাঁচ তারকা হোটেল চালুর দাবি জানিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন,বর্তমানে মংলা বন্দরে ৪.২ মিটারের উপরে জাহাজ আসতে পারে না। এজন্য সার্বক্ষণিক ড্রেজিং ব্যবস্থা চালু রাখা প্রয়োজন।

এছাড়া দুই-একদিনের মধ্যেই মংলা-ঘোষিয়াখালী নৌরুটে খনন কাজ সমাপ্তের পর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এর উদ্বোধন করবেন জানিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, এর ফলে নৌ পথে মংলা বন্দর ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৫
এমআরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।