ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ধনী-গরিব লন হাইফাই দুইশ’

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৫ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৫
ধনী-গরিব লন হাইফাই দুইশ’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘ধনী-গরিব লন হাইফাই দুইশ’। খালি সুতি কটন শার্ট দুইশ’।

দেইখ্যা লন, বাইছ্যা লন দুইশ’। এই যে মডেল, এই যে কালার দুইশ’। লন হাইফাই, জোড়া লন চারশ’। ’

অাসন্ন ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটে এভাবেই সুরে সুরে গলা মিলিয়ে ক্রেতা ডাকছেন শাহজাহানসহ অনেক হকার।

কথা বলে জানা গেলো, চাঁদপুরের ইচলির বাসিন্দা শাহজাহান ব্যবসাসূত্রে প্রায় চার বছর ধরে ফার্মগেটে সেজান পয়েন্টের ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করেন।

ঈদের বেচাকেনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ১৫ রমজানের পরে বেচাকেনা কয়েকগুন বেড়েছে। ফুটপাতের দোকানিদের কোনও বিরাম নেই এখন। প্রতিটি শার্ট দুইশ’ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। গার্মেন্টসের লটের শার্ট ও বড় বড় দোকানে বিক্রি না হওয়া শার্টগুলো তারা ফুটপাতে বিক্রি করছেন বলে শাহজাহান জানান।
 
ঈদ উপলক্ষে জমে ওঠা ফুটপাতের এই বিকিকিনি যেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলন মেলা। তবে ফুটপাতের এই বাজারে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের আনাগোনাই বেশি। সাধ্যের মধ্যেই সাধের পণ্য কিনছেন এখানকার ক্রেতারা।

রাজধানীর ফার্মগেট, মিরপুর-১০ ও নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পাঞ্জাবি ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা, ফতুয়া ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ ৪৫০ টাকা, বাচ্চাদের পোশাক ৩৫০ থেকে ৪০০ ‍টাকা, শার্ট ২০০ থেকে ৩৫০, প্যান্ট ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বড়দের জুতা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, টিশার্ট ১৫০ ‍টাকা, চশমা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, ছেলেদের বেল্ট ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, মেয়েদের স্যান্ডেল ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা, ছেলেদের স্যান্ডেল ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফার্মগেটে সেজান পয়েন্টের সামনে বসেন ঘড়ি বিক্রেতা সাহাদাত। অন্য সময় প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার টাকার ঘড়ি বিক্রি করলেও এখন নয় হাজার টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা করছেন তিনি। প্রতিটি ঘড়ির মূল্য ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বলে জানান এই ঘড়ি বিক্রেতা।
 
সাহাদাত বাংলানিউজকে বলেন, আমার দোকানের ক্রেতা বলতে ছাত্র ও বাসযাত্রী। আল্লাহ দিলে বেচাকেনা অনেক ভালো।

ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের কাছে গেঞ্জি পছন্দ করছেন সাইদুল ইসলাম নামে এক যুবক। তিনি বরিশালের উজিরপুর থেকে মহানগরীর একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছেন। সাইদুল বলেন, এখানে সস্তায় উন্নতমানের গেঞ্জি পাওয়া যাচ্ছে।

অন্যদিকে, ধনী-গরিব সব ধরনের ক্রেতার মিলনমেলা যেন নিউমার্কেটের ফুটপাত। দোকানিরা জানান, গত শুক্রবার থেকে ঈদের বেচাকেনা জমে উঠেছে এখানে। বেচাকেনা আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।

নিউমার্কেটের ফুটপাতে প্রতিটি বেল্ট ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, ছেলেদের জুতা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, মেয়েদের লিলেন কাপড়ের ফ্রক ৩০০ টাকা, চায়না প্লাজু ২০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৭০০ টাকা, বাচ্চাদের ফ্রক ও জিন্স ৩০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

নিউমার্কেটে যাদব ঘোষের গলিতে পাঞ্জাবি বিক্রি করেন অাব্দুল বাতেন। ফুটপাতে ঈদের বেচাকেনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুক্রবার বেচাকেনা আরও বাড়বে আলহামদুলিল্লাহ।
 
কোন ধরনের ক্রেতা বেশি- এমন প্রশ্নের জবাবে বাতেন বলেন, প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণির ক্রেতা আহে নিউমার্কেটে। মধ্যবিত্ত আহে নিজের কাপড় কিনতে।

ধনীরাও অন্যকে উপহার দেওয়ার জন্য কাপড় কিনতে নিউমার্কেট আসে বলে জানান এই কাপড় ব্যবসায়ী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৫
এমআইএস/এসইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।