ঢাকা: আর ক’দিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। রাজধানীর বড় বড় শপিং মলসহ বিভিন্ন বিপণি বিতানে লেগেছে কেনাকাটার ধুম।
তেমনি শুক্রবার (১০ জুলাই) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সেও ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীর উল্লেখযোগ্য ভিড়। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ক্রেতাবান্ধব এ মলে কেনাকাটার পরিবেশে ক্রেতারা যেমন খুশি, তেমনি সন্তুষ্ট বিক্রেতাতারাও।
রমজানের শেষ দশকে সাপ্তাহিক ছুটিরদিন শুক্রবার বসুন্ধরা সিটি ঘরে এবং দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া গেল।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা অনুযায়ী নিত্যনতুন ডিজাইনের বাহারি পোশাকে ঈদ মার্কেট সাজিয়েছেন তারা। গুঁড়ি গুঁড়ি কিংবা কখনও মুষলধারে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই পছন্দের কেনাকাটা করতে এসব দোকানে ভিড় করেছেন ক্রেতারা।
নতুন পোশাক, এর সঙ্গে মিলিয়ে জুতো, জুয়েলারি, প্রসাধনী সবই কিনছেন তারা।
তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে পোশাকের দোকানগুলোতে। ইনফিনিটি, একসটাসি, ওয়েসটেকস, দেশীদশ সহ বিভিন্ন মেগামল এবং মেনজ ক্লাব, দর্জি বাড়ী, ফ্রিল্যান্ডসহ বিভিন্ন নামি ব্র্যান্ডের দোকানের বিক্রেতাদের যেন দম ফেলারও ফুরসত নেই।
ওয়েসটেকস মেগামলের এক বিক্রয় কর্মী জানান, বেচা-বিক্রি খুব ভালো। ক্রেতাদের সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বেশি আগ্রহ পাঞ্জাবি ও জিন্স টপসে
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পোশাক। সেক্ষেত্রে ছেলেদের বেশি আগ্রহ থাকে পাঞ্জাবিতে। শার্ট-প্যান্ট বিক্রিও ভালো। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে থ্রি-পিচ ও জিন্স টপসেই আগ্রহ বেশি।
ওয়েসটেকস মেগামলের ক্যাশ অফিসার মো. জাহিদ হাসান বাংলানিউজকে জানান, এই মেগামলে সব বয়সীদের নানা পোশাক রয়েছে। তবে আগ্রহের শীর্ষে আছে-মেয়েদের ক্ষেত্রে থ্রি-পিচ এবং জিন্স-টপসে। আর ছেলেরা বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে।
যেমন দামে পোশাক...
বাজেট অনুযায়ী নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে বসুন্ধরা সিটির বিভিন্ন ফ্লোরের দোকানগুলোতে। নামি-দামি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি বিদেশি কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যে। তবে ঈদ উপলক্ষে কিছু কিছু দোকানে ছাড় চলছে!
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এবার ঈদে মেয়েদের সুতি শাড়ি ৯৯০ টাকা থেকে ২২৫০টাকা এবং জর্জেট শাড়ি পাওয়া যাবে ১৭৫০ টাকা থেকে ৮৫৫০ টাকার মধ্যে।
আর সিঙ্গেল কামিজ পাওয়া যাচ্ছে ১০৯০টাকা থেকে ২৯৫০ টাকার মধ্যে। টপস কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ৯৯০টাকা থেকে ৩৫৫০টাকা।
আর ৫৫০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাশাপাশি অন্যান্য জুতোও পাওয়া যাচ্ছে।
মান ও ডিজাইন ভেদে ছেলেদের শর্ট পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ১৬৫০ টাকা থেকে ২২৫০ টাকার মধ্যে, রেগুলার পাঞ্জাবি ২২৫০ টাকা থেকে ২৫ হাজার ৫৫০ টাকার মধ্যে।
ছেলেদের হাফ হাতা শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৯৯০ টাকা থেকে ২৪৫০ টাকায় এবং ফুলহাতা শার্ট ১১৯০ টাকা থেকে ৪৮৫০ টাকার মধ্যেই।
এছাড়া জিন্স প্যান্ট ২২৫০ টাকা থেকে ৩৫৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর ছেলেদের চামড়ার জুতো পাওয়া যাচ্ছে ২২৫০ থেকে ৬৫৫০ টাকার মধ্যে। স্যান্ডেলে পড়বে ১৪৫০ টাকা থেকে ৪২৫০ টাকা।
বাচ্চাদের পোশাক ৭৫০ টাকা থেকে ২২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।
শাড়ির খোঁজ-খবর
বসুন্ধরা সিটির লেভেল-৪ এ দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ির সম্ভার। এখানে পাওয়া যাচ্ছে শালিমার, মনেরেখ শাড়িজ, নীল আচল, ঢাকা জামদানি কুটির, চামেলি শাড়িজসহ নানা নামি শাড়ির দোকানে পাওয়া যাচ্ছে কাঞ্জিবরাম, রাজস্থানি, পঞ্চমকলি, বেনারশি, চেন্নাই, ঢাকাই জামদানি, জর্জেট, শিফন ইত্যাদি শাড়ি।
তবে নীল আচল শাড়ির বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ট্রাডিশনাল শাড়ি বিশেষ করে কাতান জাতীয় শাড়িতেই ক্রেতাতের আগ্রহ বেশি।
বসুন্ধরায় কেন আগ্রহ?
রাজধানীর উত্তরা থেকে শপিং করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সিলভিয়া সুলতানা বলেন, এখানে শপিং করে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। তাই উত্তরা থেকে যেকোনো উৎসব কিংবা প্রয়োজনীয় শপিং করতেই বসুন্ধরায় আসি।
তার সঙ্গে যোগ করে সিলভিয়ার মা সুলতানা জাহান বললেন, ওকে কতো করে বললাম, উত্তরা, গুলশানে কত ভালো শপিং মল রয়েছে সেখানে গিয়ে শপিং করি। কাছেও হবে তেমনিভাবে যানজটেও পড়তে হবে না।
কিন্তু মেয়ের এক কথা সে বসুন্ধরা সিটি ছাড়া অন্য কোথাও শপিং করবে না!’
পণ্য কিনে জিতুন ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি!
কেনাকাটার পাশাপাশি ক্রেতাদের জন্য র্যাফেল ড্রয়ের ব্যবস্থা করেছে বসুন্ধরা সিটি কর্তৃপক্ষ। ড্রতে বিজয়ী ক্রেতাদের জন্য থাকছে ১১টি মেগা পুরস্কারসহ মোট ১০৯ টি পুরস্কার।
সর্বনিম্ন ২০০ টাকার পণ্য কিনলেই যে কোনো ভাগ্যবান ক্রেতা পেতে পারেন এসবের যে কোনো একটি।
প্রথম ভাগ্যবান ক্রেতা পাবেন টয়োটা ১৫০০ সিসির একটি ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি। দ্বিতীয় ভাগ্যবান একটি ডায়মন্ড সেট এবং তৃতীয় ভাগ্যবান পাবেন ৮১২ সিসির কিউকিউ ৩ চেরি ব্র্যান্ডের গাড়ি।
চতুর্থ পুরস্কার ৫ ভরি সোনার গহনা, পঞ্চম পুরস্কার দুই যুগলের জন্য একটি ট্যুর প্যাকেজ, ষষ্ঠ পুরস্কার ৩ ভরি সোনার গহনা, সপ্তম পুরস্কার ১১০সিসির স্কুটার, অষ্টম পুরস্কার ১১০ সিসির মাহিন্দ্র ব্যান্ডের মোটর সাইকেল, নবম পুরস্কার ৪৭ ইঞ্চি থ্রিডি এলইডি টেলিভিশন, দশম পুরস্কার ১২৫ সিসির ফিউশন মোটর সাইকেল এবং ১১তম পুরস্কার হিসেবে থাকছে ১০০ সিসির টিভিএস ব্র্যান্ডের মোটর সাইকেল।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৫
এসএ/এমএ