ঢাকা: বিদেশি বিনিয়োগ আশানুরুপ না হওয়া প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জমি ও গ্যাস স্বল্পতার কারণে চাহিদামতো বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছি না। জমির স্বল্পতার কারণে স্যামসাং আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে পারেনি।
রোববার (১২ জুলাই) দুপুরে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০) দলিলের খাতভিত্তিক বাণিজ্য ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রফতানি বাড়াতে পণ্য বৈচিত্র্য ও বাজারের বৈচিত্র্য আনতে হবে। বর্তমানে আমরা পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করছি। এছাড়াও আইটি, জাহাজ, চামড়া, কৃষি শিল্পের ওপর জোর দিতে হবে। আগে আমরা রফতানির জন্য কানাডা, আমেরিকা ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের ওপর নির্ভর ছিলাম। এখন ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় নতুন বাজার সৃষ্টি করেছি।
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ(এফডিআই) প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ পেতে ভিয়েতনাম ফ্রি জমি দিচ্ছে। ভারতের রাজস্থানও ফ্রি জমি দিচ্ছে। অথচ বিদেশের নামি-দামি কোম্পানিকে আমরা জমি দিতে পারছি না। এতে করে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগ।
মন্ত্রী বলেন, গ্যাস সংকটের কারণেও বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঈশ্বরদী ইপিজেডে ডেনিম কোম্পানি ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু তারা গ্যাস না পাওয়ার কারণে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ভোলায় গ্যাস ও জমি আছে, সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ হতে পারে। আমাদের উত্তরবঙ্গেও পর্যাপ্ত জমি আছে, সেখানে গ্যাস সংযোগ দিয়ে শিল্প কারখানা
গড়ে তোলা যায়।
ডিউটি ফ্রি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তামাক ও অ্যালকোহল ছাড়া অধিকাংশ পণ্যে আমরা ডিউটি ফ্রি পেয়েছি। চীনে ৫০০টি পণ্যের ডিউটি ফ্রি পেয়েছি। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
জিএসপি প্রসঙ্গে তোফায়েল বলেন, পৃথিবীতে অনেকে দেশের শিল্প কারখানায় বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অ্যাকওয়ার্ড ও অ্যালায়েন্স করতে হয়নি। কিন্তু রানা প্লাজার ঘটনায় এটি করতে হয়েছে। জিএসপি থেকে আমরা খুব বেশি সুবিধা পাইনি।
পরামর্শ সভায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, বর্তমানে পাট অনেক অবহেলিত। অথচ এই পাট বঙ্গবন্ধুর সময় গুরুত্বের দিক থেকে প্রথম অবস্থানে ছিল। পাট শিল্পে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হলে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের দেশে ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল শিক্ষা অনেক উপেক্ষিত। এ শিক্ষাকে উপেক্ষা থেকে দূর করতে হলে প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বের করে আলাদা মন্ত্রণালয় করতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন পরামর্শ সভায় বলেন, খাদ্যের মান পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিএসটিআই’র অনেক প্যারামিটার নেই। এমনকি ভারতের চেয়ে আমাদের বিএসটিআই অনেক দুর্বল। বিএসটিআই’র ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে।
পরামর্শ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, বিবিএসের সচিব কানিজ ফাতেমা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর